ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল ছবি।
শহরের রাস্তার জবরদখলকারীদের নিয়ে সমীক্ষা করতে কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে সেই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে। এখন সেই সমীক্ষার কাজ শেষের পথে। শনিবার কলকাতা পুরসভায় আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই সমীক্ষার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা পড়বে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। মেয়রের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভা সমীক্ষা করে ৫৫ হাজার ৬০০ জন বৈধ হকারকে চিহ্নিত করেছে। আগে এক জন হকার নিজের নামে একাধিক ডালা বসাতেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুরসভার কর্মীরা সমীক্ষার কাজে নেমে একটি অ্যাপের ব্যবহার চালু করেছেন। যে অ্যাপে হকারের নাম-ঠিকানা ছাড়াও আধার কার্ডের নম্বর আপলোড করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এক নামে একাধিক ডালা বসিয়ে ব্যবসা চালানোর দিন এ বার কলকাতা শহরে শেষ হতে চলেছে বলেই জানিয়েছেন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভার সমীক্ষক দল যে ফুটপাথে গিয়ে যে হকারদের পেয়েছে, তাঁদের নাম অ্যাপে আপলোড করা হয়েছে। তাঁদেরকেই বৈধ হকার বলে ধরা হবে। এক নামে একাধিক ডালা থাকলে, তা গ্রাহ্য হবে না। যিনি হকারি করছেন, তাঁকেই প্রকৃত হকার হিসাবে ধরবে কলকাতা পুরসভা।’’
কলকাতা পুরসভার তরফে ১৫০ জন পুরকর্মীকে হকার সমীক্ষার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ ধরনের অ্যাপ। সমীক্ষার কাজ করতে এক একটি হকার জ়োনে কমবেশি ১০টি করে দল নেমেছিল। প্রতিটি দলে চার-পাঁচ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী কাজ করেছিলেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৪০টি এমন ‘টিম’ নামানো হয়েছিল। এই সমীক্ষার কাজে পুরসভার কর্মীদের অ্যাপে ‘লগ ইন’ করার জন্য একটি ‘ইউজ়ার আইডি’ দেওয়া হয়েছিল। ইউজ়ার আইডি দিয়ে তাঁরা অ্যাপে প্রবেশ করে সমীক্ষার কাজ শুরু করেন। অ্যাপে একটি আবেদনপত্র রাখা ছিল। সেই আবেদনপত্রে হকারের নাম, ঠিকানা, আধার কার্ড নম্বর, আধারের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নম্বর, প্যান, স্টলের পরিমাপ, কিসের দোকান— সব কিছু নথিভুক্ত করা হয়েছে।
পাশাপাশি, হকারদের দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে দোকান-সহ তাঁদের ছবি তোলাও হয়েছে। হকারদের যাবতীয় তথ্য ও নথি সংগ্রহ করার পর সেই রাস্তা ধরে দোকানের লোকেশনের জিপিএস ট্র্যাক করা হবে। অগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়েই সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে পুরসভা। তাই আগামী সপ্তাহেই রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে রিভিউ বৈঠক হবে। তার পরেই রাজ্য সরকার কলকাতার হকার নীতি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।