বিপজ্জনক: ছুটে চলা বাসের গা ঘেঁষে এ ভাবেই চলছে ডিভাইডারে রং করার কাজ। ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
দিনের ব্যস্ত সময়ের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ। তীব্র গতিতে ছুটে চলেছে গাড়ি, বাস-সহ অন্য যানবাহন। সেই পথেই বিপজ্জনক ভাবে রাস্তার ধারের ডিভাইডারে রং করছেন কয়েক জন শ্রমিক। অথচ, গার্ডরেল দিয়ে কাজের জায়গা ঘিরে রাখা কিংবা সুরক্ষার অন্য ব্যবস্থা নেই। ওই শ্রমিকদের পাশ দিয়েই ছুটছে সব গাড়ি। কেউ কেউ রেষারেষিও করছেন। যার জেরে প্রতি মুহূর্তে থাকছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। সম্প্রতি এক সকালে এমনই ছবি দেখা গেল ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ-সহ উত্তর কলকাতার দু’-একটি রাস্তায়।
এই দৃশ্য মনে করিয়ে দিয়েছে গত নভেম্বরে এ জে সি বসু উড়ালপুলের উপরে এক দুর্ঘটনাকে। উল্লেখ্য, ২৮ নভেম্বর সকালে এইচআরবিসি-র অধীনস্থ এ জে সি বসু উড়ালপুলে রঙের কাজ করছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা কয়েক জন শ্রমিক। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ছোট লরি তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক মহিলা শ্রমিকের। ওই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছিল, কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া শ্রমিকদের কাজে লাগানো হচ্ছে?
ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়েও দেখা গেল, রাস্তার উপরে সার দিয়ে বসে ডিভাইডারে রং করছেন অন্তত জনা পনেরো শ্রমিক। আশপাশ দিয়ে যাচ্ছে বাস, গাড়ি ও মোটরবাইক। শ্রমিকেরাই জানালেন, কখনও গার্ডরেল থাকে, কখনও থাকে না। অন্য দিকে, যে ঠিকাদার এই কাজের বরাত নিয়েছেন, সেই চন্দন সরকার বলেন, ‘‘কাজ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গার্ডরেল আনা যায়নি। তবে নিশ্চিত ভাবেই সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’ কিন্তু আগে থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে কেন সুরক্ষার বন্দোবস্ত রাখা হবে না, সেই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। একই ভাবে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে লালমন্দিরের সামনেও দেখা গিয়েছে ডিভাইডারে রং করার দৃশ্য। সেখানে সুরক্ষার জন্য মাত্র একটি গার্ডরেল রয়েছে।
উল্লেখ্য, গার্ডরেল কিংবা উজ্জ্বল রঙা পোশাক ছাড়া এ ভাবে কাজ করতে গিয়ে বহু সময়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন শ্রমিকেরা। তা সত্ত্বেও এ সব দিকে প্রশাসনের নজর যে তেমন পড়ে না, এই ছবি থেকেই তা স্পষ্ট।
যদিও কলকাতা পুরসভার দাবি, শহরে বিভিন্ন রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করে বিভিন্ন সংস্থা। ডিভাইডারও তারাই দেখাশোনা করে। পুরসভার রাস্তা বিভাগের মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি তাঁদের দফতর দেখে না। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করে বিভিন্ন সংস্থা। তবুও শহরের বুকে যখন এমন হচ্ছে বলে শুনলাম, অবশ্যই সিভিল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ নেব।’’