যাঁরা আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, তাঁদের পুলিশ তথা প্রশাসনিক হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। ফাইল চিত্র।
পথ দুর্ঘটনায় আহত বা সঙ্কটজনক ব্যক্তির সময়ে চিকিৎসা না হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয় অনেক ক্ষেত্রেই। কারণ, তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে পরবর্তী কালে বিপাকে পড়ার আশঙ্কায় বেশির ভাগই পিছিয়ে যান। এ বার সেই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যাঁরা আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন, তাঁদের পুলিশ তথা প্রশাসনিক হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেওয়া হবে।
এ নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক ২০১৫ সালে রাজ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা তৈরির কথা বলেছিল। তার পরে দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও নানা জটিলতায় পশ্চিমবঙ্গে ওই নির্দেশিকা তৈরির কাজ এগোয়নি। বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতর সাত দফা নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে যিনি এগিয়ে আসবেন, তাঁকে ‘সুরক্ষা কবচ’ দেওয়া হবে।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনায় আহত কোনও ব্যক্তিকে কেউ নিকটবর্তী সরকারি অথবা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাহায্যকারীকে আটকে রাখা যাবে না। নাম এবং ঠিকানা জানানোর পর তিনি চলে যেতে চাইলে তাঁকে ছেড়ে দিতে হবে। তবে কোনও ব্যক্তি নিজের নাম, ঠিকানা জানাতে না চাইলে তাঁকে তার জন্য জোর করাও যাবে না। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি বিধির আওতায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। কোনও দুর্ঘটনা বা কোনও ব্যক্তির রাস্তায় পড়ে থাকার খবর পুলিশকে ফোনে জানানো হলে, যিনি সেই খবর দিচ্ছেন, সেই ব্যক্তির নাম এবং ব্যক্তিগত তথ্য জানতে পুলিশ তাঁকে কোনও রকম জোরাজুরি করতে পারবে না।
দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতাল থেকে পুলিশে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়, সেখানে যিনি সাহায্য করছেন, তাঁর অনুমতি নিয়েই নাম দেওয়া যাবে। যে আধিকারিক (হাসপাতাল বা পুলিশের) সাহায্যকারীর নাম বা পরিচয় জানার জন্য জোরাজুরি করবেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সাহায্যকারী ব্যক্তি আহতের পরিচিত না হলে তাঁর কাছ থেকে চিকিৎসার জন্য অর্থ দাবি করা যাবে না। কোনও অজুহাত ছাড়াই আহতের চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা প্রযোজ্য হবে।