VidyasagarSetu

Vidyasagar Setu: ঝাঁপ দেওয়া বন্ধে বিদ্যাসাগর সেতুর রেলিংয়ে কাঁটাতার বসানোর প্রস্তাব

সম্প্রতি বিদ্যাসাগর সেতুর রেলিং টপকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিতে গিয়েছিল এক কিশোর। কর্তব্যরত এক এনভিএফ কর্মী ঘটনাটি দেখে ওই কিশোরকে বাধা দেন।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৫০
Share:

হাওড়া সেতুর মতো এমন তারের বেড়া দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিদ্যাসাগর সেতুতে। ফাইল চিত্র

সম্প্রতি বিদ্যাসাগর সেতুর রেলিং টপকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিতে গিয়েছিল এক কিশোর। কর্তব্যরত এক এনভিএফ কর্মী ঘটনাটি দেখে ওই কিশোরকে বাধা দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

Advertisement

আবার এমনও হয়েছে, সেতুর মাঝখানে রয়েছে গাড়ি। কিন্তু চালক বা যাত্রী নেই। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সেতুতে গাড়ি রেখে রেলিং টপকে নীচে ঝাঁপ দিয়েছেন সেটির চালক।

উপরের এই দু’টি ঘটনাই শুধু নয়। গত দু’বছরে বিদ্যাসাগর সেতু থেকে তিরিশটিরও বেশি ঝাঁপ দেওয়া বা ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে পুলিশি তৎপরতায় রক্ষা পেয়েছেন ২০ জনের বেশি। তবে পুলিশি নজর এড়িয়ে ওই দু’বছরে সেতু থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ১১ জন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সেতুর রেলিং টপকে ঝাঁপ দেওয়া ঠেকাতে এ বার সেখানে ১০ ফুটেরও বেশি উঁচু তারের বেড়া এবং কাঁটাতার লাগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। লালবাজারের তরফে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি) এবং রাজ্য পরিবহণ দফতরে। বর্তমানে বিদ্যাসাগর সেতুর রেলিংয়ের উচ্চতা তিন ফুট। লালবাজারের এক কর্তা জানান, রেলিংয়ের উচ্চতা বৃদ্ধি করা ছাড়াও সেখানে সেন্সর লাগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ রেলিং টপকানোর চেষ্টা করলে ওই সেন্সর স্বয়ংক্রিয় ভাবে বেজে উঠে পুলিশকে সতর্ক করতে পারে।

প্রসঙ্গত, বছর তিনেক আগে হাওড়া সেতুর রেলিংয়ের উচ্চতা বাড়ানোর পরে সেটি টপকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়েছে। আবার মেট্রোয় কড়া নজরদারির ফলে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতাও খানিকটা কমেছে। এক পুলিশকর্তা জানান, এর জেরেই বিদ্যাসাগর সেতু থেকে ঝাঁপ দেওয়ার প্রবণতা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিদ্যাসাগর সেতুর দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটার। এ ছাড়াও রয়েছে দশটি র‌্যাম্প,
যেগুলি বিভিন্ন দিক থেকে এসে সেতুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। চার কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সেতুর টোল প্লাজ়ার কাছে পুলিশ কিয়স্ক থাকলেও বাকি অংশে কোনও কিয়স্ক নেই। সেতুর যে চারটি পাইলন রয়েছে (যেখান থেকে সেতুর কেব্‌লগুলি ঝোলে), সেখানে বর্তমানে নজরদারি চালান চার জন এনভিএফ কর্মী। কিন্তু দু’টি পাইলনের মধ্যে দূরত্ব ২০০ মিটারের বেশি। ফলে, কাউকে সেতু থেকে ঝাঁপ দিতে দেখলে সেখানে পৌঁছে তাঁকে আটকানো অনেক সময়েই কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে বলে দাবি পুলিশের। আরও অভিযোগ, সেতুতে উঠে দু’কিলোমিটার যাওয়ার পরে প্ৰথম পুলিশের দেখা মেলে। তাই ওই সেতুতে আরও পুলিশকর্মী মোতায়েন করা এবং আরও কিয়স্ক যাতে বসানো যায়, সেই চেষ্টা চলছে বলে সূত্রের খবর।

লালবাজার জানিয়েছে, অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুতে নজরদারি চালানোর জন্য কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কয়েকটি ক্যামেরা ছাড়া আর কোনও ক্যামেরা নেই। হাতে গোনা ওই ক্যামেরা দিয়ে পুরো সেতুতে নজরদারি চালানো অসম্ভব। তাই আরও ক্যামেরা বসানোর জন্যও এইচআরবিসি-র কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement