জয়পাল সিংহ ভুল্লার। ফাইল চিত্র
কলকাতায় মৃত গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লারের দেহের দ্বিতীয় বারের ময়না-তদন্তের জন্য সোমবার নির্দেশ দিয়েছে পঞ্জাব হাইকোর্ট। কলকাতা থেকে ছেলের দেহ নিয়ে পঞ্জাবে ফিরে তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন জয়পালের বাবা। এর পরেই ছেলের মৃত্যুর আসল কারণ জানতে দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্তের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। হাইকোর্ট রাজি না হলে মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। শেষে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে পঞ্জাব হাইকোর্ট এ দিন দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এ দিকে নিউ টাউনে গুলি-কাণ্ডে ধৃত ভরত কুমার কোনও রকম নথি ছাড়াই মোবাইলের ‘প্রি-অ্যাক্টিভেটেড’ সিম কলকাতা থেকে কিনে পঞ্জাব, হরিয়ানায় বিক্রি করত বলে জানা গিয়েছে। রাজ্য পুলিশের দাবি, পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ভরতের বেআইনি মোবাইল সিম বিক্রির ব্যবসা রয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন এলাকা থেকে সিম কিনে কয়েক গুণ বেশি দামে সেখানে বিক্রি করত সে। পুলিশের দাবি, এই ধরনের সিম কে কিনছে, তার কোনও নথি থাকে না। সিম নেওয়ার সময়ে কোনও নথি জমা দেওয়া বা যাচাই করার বালাইটুকুও নেই। ফলে ওই ধরনের সিমের চাহিদা প্রবল।
সপ্তাহ দুয়েক আগে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা যায় নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে লুকিয়ে থাকা পঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার এবং যশপ্রীত খারার। জানা যায়, সুমিত কুমার নামে এক জন ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছে। কিন্তু পরে জানা যায়, জয়পালের বন্ধু ভরত সুমিতের পরিচয়পত্র জমা দিয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ সুমিত ও ভরতকে গ্রেফতার করে।
পুলিশের দাবি, মোবাইলের সিম বিক্রির ব্যবসার জন্য কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল ভরতের। উপরন্তু তার শ্বশুরবাড়ি কলকাতায় বলে ব্যবসায় সুবিধাই হয়েছিল।
পুলিশের কাছে জেরায় সুমিত ও ভরতের দাবি, আগে থেকে ওই দুই গ্যাংস্টারকে চিনত না তারা। জেরায় ভরত জানায়, এক লক্ষ টাকা দিয়ে ওই দুই গ্যাংস্টারকে গ্বালিয়র থেকে কলকাতায় এনে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে বলেছিল অস্ট্রেলিয়াবাসী সানি নামে তার এক পরিচিত ব্যক্তি। এ শহরে ভরতের চেনাজানা বেশি থাকায় তাকেই ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ভরতের দাবি, সানির ভাই গ্যাংস্টারদের চক্রের সঙ্গে যুক্ত। সানিও ওই চক্রের সদস্য বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। ভরতের ওই বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, ভরতের এক আত্মীয়ের কাছ থেকে সুমিত একটি গাড়ি কিনেছিল। সেই সময়ে ওই আত্মীয়কে নিজের একাধিক পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি দিয়েছিল সুমিত, যা নিজের সংগ্রহে রেখেছিল ভরত। গ্যাংস্টারদের জন্য নিউ টাউনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়ার সময়ে সেই নথিই জমা দেয় সে।