Jnaneswari Express

জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় ‘মৃত’ অমৃতাভ ৬ বছর বন্দি ছিল মাওবাদী ডেরায়, দাবি পরিজনেদের

অমৃতাভের সম্পর্কিত ভাই অরুণাভ চৌধুরী জানান, অমৃতাভ মাওবাদীরে ডেরায় ছিল বলে ফিরে আসার পর তাঁরা জেনেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ২৩:২০
Share:

অমৃতাভ চৌধুরী। ফাইল চিত্র।

জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা-কাণ্ডে ধৃত অমৃতাভ চৌধুরীর ঘটনায় নতুন মোড়। তাঁর দেশের বাড়ির প্রতিবেশী এবং পরিজনেদের একাংশের দাবি ৬ বছরের অজ্ঞাতবাস-পর্বে মাওবাদীদের ডেরায় ছিলেন অমৃতাভ। এরপর ফিরে আসেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার মন্তেশ্বরে।

Advertisement

২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন অমৃতাভ। মন্তেশ্বরের বামুনপাড়ার বাসিন্দা অমৃতাভ। চাকরির উদ্দেশ্যে ভিন্নরাজ্যে যাওয়ার পথেই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরই তাঁকে মৃত বলে দাবি করেছিল পরিবার। রেলের পক্ষ থেকে মৃতদেহের নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষার ফল মিলে যায়। মৃত বলেই তার পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চার লক্ষ টাকা ও অমৃতাভের বোনকে রেলে চাকরি দেওয়া হয়।

পরিজনেরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৬ বছর পর হঠাৎই মানসিকভাবে অসুস্থ অমৃতাভ নিজের গ্রামের বাড়িতে ফেরেন অমৃতাভ। তাঁর মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনার জন্যে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করান পরিজননা। অসুস্থ অমৃতাভর সাথে কাউকে কথা বলতে দেওয়া হতো না। তাই গ্রামের মানুষরা কথা বলে জানতেও পারেননি রহস্য কী।

Advertisement

সোমবারও এই বিষয়ে বামুনপাড়ার বাসিন্দারা বিশেষ কোনও কথা বলতে চাননি। পরিজনদের এখন দাবি, মাওবাদীদের ডেরায় ছিলেন বলেই অমৃতাভকে কেউ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কলকাতায় চিকিৎসার পর এখন একটু সুস্থ তিনি। তবে বার বার ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন ? তাহলে ডিএনএ পরীক্ষার ফল মিলে গেল কী করে ?

অমৃতাভের সম্পর্কিত ভাই অরুণাভ চৌধুরী জানান, অমৃতাভ মাওবাদীরে ডেরায় ছিল বলে ফিরে আসার পর তাঁরা জেনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার মাধ্যমিকের ফল দাদাই (অমৃতাভ) ইন্টারনেটে দেখেছিলেন। সেদিনই রওনা দেন তিনি।’’

দাদা ফিরে এলে কিছু জানতে চাননি?

অরুণাভের জবাব, ‘‘দাদার স্মৃতিশক্তি ঠিক ছিল না। টানা দেড় বছর চিকিৎসা চলেছিল।’’ তিনি দাবি করেন, অমৃতাভ প্রোমোটারি করেন না। নিজেরই জায়গায় বাড়ি করেছেন। বলেন, ‘‘গ্রামের পরিবেশ ভাল লাগত বলে দাদা মাঝেমধ্যে চলে আসত।’’

অমৃতাভর কাকা সঞ্জয় চৌধুরী অবশ্য সব দায় রেলকে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রেল ডিএনএ মিলিয়েছে। রেলই চাকরি দিয়েছে। যা বলার রেলই বলুক।’’ কাগজে নাম দেখেই যে অমৃতাভ দুর্ঘটনাগ্রস্ত, সে কথা তাঁরা জেনেছিলেন বলেও দাবি সঞ্জয়ের।’’

অমৃতাভের প্রতিবশী তথা খুড়তুতো ভাই প্রবীরকুমার চৌধুরী জানান, চিকিৎসার ফলে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর গ্রামে আবার আসেন অমৃতাভ। তার দাবি, পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ পেয়েই এখানে বাড়িঘর বানিয়েছেন অমৃতাভ। যা করার আইন মেনেই হয়েছে।

কিন্তু কী ভাবে মৃতের পুনরুত্থান ঘটল? কী ভাবেই বা তাঁকে সকলে মেনে নিল? কোন আইনে এতদিন তাঁর বোন চাকরি করে যাচ্ছেন? তার উত্তর দেননি পরিজনেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement