কালীঘাট মন্দির।—নিজস্ব চিত্র
শুরু হয়ে গেল কালীঘাট মন্দিরের আপাদমস্তক সংস্কারের প্রক্রিয়া। কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় একাধিক স্থপতিকে নিয়ে শনিবার হাজির হন ওই মন্দির চত্বরে। সঙ্গে ছিলেন পুরসভার কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ার, স্থানীয় কাউন্সিলর এবং পুলিশও। মন্দিরে ঢোকা ও বেরোনোর পথ-সহ লাগোয়া দুধপুকুরের চারপাশ ঘুরে দেখেন তাঁরা। ঘণ্টাখানেক ধরে মন্দির এলাকার কোথায় কী রয়েছে, কোথায় অসুবিধা— সবই নোট করে নেন।
দক্ষিণেশ্বরের মতো কালীঘাট মন্দিরেরও আমূল সংস্কার নিয়ে মঙ্গলবার নবান্নে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই প্রেক্ষিতে এ দিন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কালীঘাটে যান মেয়র। শোভনবাবু জানান, ওই মন্দিরের সংস্কার নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাবনার কথা নবান্নের বৈঠকে জানিয়েছেন। কলকাতা পুরসভার উপরে সেই সংস্কারের ভার পড়েছে। কালীঘাট মন্দির দেশের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। দেশ-দেশান্তর থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী এখানে পুজো দিতে, প্রার্থনা করতে আসেন। কিন্তু বর্তমান পরিবেশে দর্শনার্থীদের অনেককেই সমস্যায় পড়তে হয়। কালীঘাট মন্দিরকে দর্শনীয় করে তুলতেই সরকার উদ্যোগী হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে সংস্কারের সেই কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে চায় পুরসভা।
মেয়র বলেন, ‘‘স্থপতিরা পুরো এলাকা ঘুরেছেন। মন্দিরে ঢোকার দুটো পথ রয়েছে। দুটো রাস্তাই ঝকঝকে করে তোলা হবে। সেই কাজও শুরু হচ্ছে।’’ এর সঙ্গে দুধপুকুরেরও সংস্কার করা হবে। ওই পুকুরের জল খান ও মাথায় নেন অনেক পুণ্যার্থী। সেটা মাথায় রেখেই সংস্কার করা হবে দুধপুকুরের। পুকুরের পাশে কাউকে পসরা নিয়ে বসতে দেওয়া হবে না। চার পাশে বসার জায়গা করা হবে। আলো দিয়ে সাজানো হবে পুরো দুধপুকুর চত্বর। মন্দিরে ঢোকার পথও প্রশস্ত করা হবে। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হবে সেখানে। মন্দির চত্বরে এখন যে পরিবেশ রয়েছে, সংস্কারের পরে তার ভোল পুরো পাল্টে দেওয়া হবে বলে দাবি পুরকর্তাদের।
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে গত বৃহস্পতিবার মেয়র পরিষদের বৈঠকে কালীঘাট সংস্কারের কাজ দ্রুত সেরে ফেলার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। শোভনবাবু জানান, একদল বিশেষজ্ঞ স্থপতি সংস্কারের মানচিত্র তৈরি করবেন। তিন-চারটি নকশা তৈরি করে তা পাঠানো হবে নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ৩১ অগস্টের মধ্যেই তা শেষ করতে হবে। তবে পুর প্রশাসন জানিয়েছে, তার আগেই ওই কাজ সম্পন্ন করে সরকারের হাতে পৌঁছে দিতে চায় তারা।
কালীঘাট মন্দিরের মূল কাঠামো বজায় রেখেই সংস্কার করা হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞেরা। পুরসভার এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার জানান, সংস্কারের জন্য কোনও দোকানদারকে উচ্ছেদ করা হবে না। তবে কাউকে কাউকে হয়তো একটু সরানো হতে পারে।