—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি হাসপাতালের ‘রেফার’ রোগে রাশ টানার কথা বলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো শুরু হয়েছে রেফার-অডিট। কিন্তু তার পরেও জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলি থেকে যে রেফার বন্ধ হয়নি, তা আরও এক বার স্পষ্ট হয়ে গেল স্বাস্থ্যকর্তাদের কথাতেই।
মঙ্গলবার এসএসকেএমের অ্যানেক্স কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে স্ট্রোকের বহির্বিভাগ ও রিউম্যাটোলজির ডে-কেয়ার পরিষেবার সূচনা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে পরিষেবা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এসএসকেএমে রোগীর চাপ বাড়ার বিষয়টি। যা থেকে প্রশ্ন ওঠে, বিভিন্ন জেলায় এখন মেডিক্যাল কলেজ গড়ে উঠেছে। তার পরেও রোগীদের ভিড় এসএসকেএম-কেন্দ্রিক কেন?
এ দিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকেও বলব, তারা আরও ভাল কাজ করুক। তাতে মানুষ ভরসা পেয়ে সেখানে যাবেন। এর ফলে পিজি-র উপরে চাপ কমবে। এটা করতে পারলে খুশি হব।’’ তিনি জানান, পিজিতে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসন (হার্ট অ্যাটাক) ব্যবস্থাপনার হাব তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। খোদ স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার কথা শুনে রাজ্যের চিকিৎসক মহলের একাংশ বলছেন, ঘটা করে বিভিন্ন জেলায় মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হলেও সেগুলির উপরে যে স্বাস্থ্য দফতরের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই, তা স্বাস্থ্যকর্তাদের কথাতেই স্পষ্ট। এ দিন স্ট্রোকের বহির্বিভাগ ও স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীর কথাতেও রেফার নিয়ে আক্ষেপের সুর ফুটে ওঠে।
তিনি বলেন, ‘‘এসএসকেএমে না গেলে ভাল হবে না, এমন একটা ধারণা রয়েছে। আগে আর জি করে এমন হত। এখন তারাও রেফার করে দিচ্ছে। এন আর এসে নিউরোলজি বিভাগ থাকলেও, সেখান থেকেও রেফার হচ্ছে। একই অবস্থা জেলার মেডিক্যাল কলেজেরও।’’ পরে অবশ্য স্বাস্থ্য-অধিকর্তা দাবি করেন, ‘‘সব হাসপাতালে যাতে স্ট্রোকের ব্যবস্থাপনা ঠিক মতো হয়, সেটাই বলতে চেয়েছি।’’ পিজির বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেসকে হাব (মূল কেন্দ্র) করে জেলা স্তরে বিভিন্ন হাসপাতালকে ‘স্পোক’ (শাখা কেন্দ্র) হিসাবে ব্যবহার করে স্ট্রোকের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও বিআইএনে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
বিআইএন-এর স্ট্রোক ইউনিটের ইন-চার্জ বিমানকান্তি রায় বলেন, ‘‘স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে শুরু হলে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব।’’ তিনি জানাচ্ছেন, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে তিনটি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা রয়েছে— আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা, পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা চালানো এবং আগাম স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণ। তারই অঙ্গ হিসাবে প্রতি বৃহস্পতিবার স্ট্রোকের বহির্বিভাগ চালু হবে। যেখানে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী সময়ে এবং আগাম স্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা মিলবে।রোগীকে বাড়িতে রেখে কী ভাবে পরিচর্যা করা সম্ভব, তা-ও পরিজনদের শেখানো হবে।