বছর দেড়েক আগে মা উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশটি তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা কেএমডিএ। ফাইল ছবি।
চিনা মাঞ্জার বিপদের আশঙ্কায় বছরখানেক ধরে একাধিক বার চিঠি দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। এমনকি, মাসকয়েক আগেও এই সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাকে। কিন্তু তার পরেও মা উড়ালপুলের বাকি বিপজ্জনক অংশে তারের জাল লাগানোর কাজ শুরু না হওয়ায় আশঙ্কা বাড়ছে পুলিশের অন্দরে। প্রশ্ন উঠেছে, গরমের শুরুতে ঘুড়ি ওড়ানো বাড়তেই মা উড়ালপুলে ফের চিনা মাঞ্জা বিপদ বাড়াবে না তো?
এই আশঙ্কার কথা ভেবেই বছর দেড়েক আগে মা উড়ালপুলের বিপজ্জনক অংশটি তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ)। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে বোট ক্লাব থেকে চার নম্বর সেতু পর্যন্ত উড়ালপুলের ৯০০ মিটার অংশ তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। যার ফলে মা উড়ালপুলের ওই অংশে চিনা মাঞ্জার বিপদ অনেকটা আটকানো গিয়েছে। তবে পুলিশের চিন্তা বাড়িয়েছে চার নম্বর সেতু থেকে পার্ক সার্কাসের দিকের কয়েকশো মিটার অংশ। কারণ, উড়ালপুলের ফাঁকা এই অংশে মাঝেমধ্যেই ঘুড়ির সুতোর কারণে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। চিন্তা বাড়িয়েছে পরমা আইল্যান্ডের দিকের অরক্ষিত অংশটিও। এই ফাঁকা অংশটিকে তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কথা বলে একাধিক বার পুলিশের তরফে চিঠি দেওয়া হলেও কাজের কাজ হয়নি এত দিনেও, যা চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশের।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছরখানেক আগে জুলাই এবং অগস্টে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে চিঠি দিয়ে কেএমডিএ-কে তারের জাল লাগানোর অনুরোধ করা হয়। এর পরে একাধিক বার চিঠি দিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মা উড়ালপুলে ওই কাজ শেষ করার অনুরোধও করা হয়। এমনকি, ডিভিশনের তরফেও মা উড়ালপুলে ফেন্সিং বসানোরকাজ গুরুত্ব দিয়ে শেষ করার অনুরোধ করা হয়েছে বলে খবর। কিন্তু তার পরেও কাজ শুরু না হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে পুলিশের অন্দরে। কড়েয়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আকাশে ঘুড়ি উড়তে দেখলেই চিন্তা বাড়ে। এমনিতেই উড়ালপুলের অরক্ষিত অংশে ঘুড়ির সুতোয় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। এই গরমে ঘুড়ি ওড়ানো বাড়লে আবার কী হবে, তা-ই ভাবছি!’’
এ নিয়ে একাধিক বার চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে কেএমডিএ। কেএমডিএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘পুলিশের তরফে চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ এলেই টেন্ডার ডেকে বাকি অংশের কাজ করা হবে।’’ আর লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আমরা তো আর সেতুতে ফেন্সিং দিতে পারি না। একাধিক বার অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার চিঠি দেওয়া হবে।’’