পার্ক স্ট্রিটে মেট্রো ভবন জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র
রেল মন্ত্রক যাত্রী পরিবহণের অনুমতি এখনও দেয়নি মেট্রোকে। তার আগেই করোনায় আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন কর্মী-আধিকারিক এবং আর পি এফ কর্মীদের একাংশ। সম্প্রতি স্টোর বিভাগের এক কর্মীর করোনাতেই মৃত্যু হয় বলে খবর। এই অবস্থায় যাত্রী পরিবহণ শুরু হলে সংক্রমণ আরও ভয়াবহ চেহারা নিতে পারে বলেই আশঙ্কা মেট্রোকর্মীদের একটি বড় অংশের।
সূত্রের খবর, পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবনেও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করায় কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেখানে সংক্রমিতদের চিহ্নিত করতে সম্প্রতি র্যাপিড টেস্ট করানো হয়। সেখানে একাধিক কর্মী এবং আধিকারিকের দেহে সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে বলেই খবর। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনি এবং রবিবার পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবনের সব ক’টি তলা জীবাণুমুক্ত করা হয়। মেট্রো ভবনের অষ্টম তলায় কর্মরত এক আধিকারিক সংক্রমিত হওয়ার পরে তাঁর সংস্পর্শে আসা জনা পনেরো কর্মী এবং আধিকারিককে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। কমবেশি ১০ জন আর পি এফ কর্মীর দেহে সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে বলেও খবর।
এই অবস্থায়, আই এন টি টি ইউ সি সমর্থিত মেট্রো রেলের প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন মেট্রো কর্তৃপক্ষকে দু’টি চিঠি দিয়েছে। জেনারেল ম্যানেজারকে লেখা একটি চিঠিতে মেট্রোকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। অন্য চিঠিতে রেলের সুরক্ষা কমিশনারের কাছে আর পি এফ কর্মীদের সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রিন্সিপাল চিফ সিকিউরিটি কমিশনারকে দেওয়া ওই চিঠিতে ব্যারাক থেকে আর পি এফ কর্মীরা সংক্রমিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চিঠিতে ব্যারাকগুলিকে স্যানিটাইজ় করার দাবিও তোলা হয়েছে।
মেট্রোর নোয়াপাড়া এবং গড়িয়া কারশেড ছাড়াও বিদ্যুতের সাবস্টেশন, ট্র্যাফিক সিগন্যালিং মোটরম্যান, সান্টার-সহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করতে হচ্ছে বলে আই এন টি টি ইউ সি সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে মেট্রোর প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মদন মিত্র বলেন, ‘‘উপযুক্ত সুরক্ষা ছাড়া মেট্রো চলাচল বিপদ বাড়াবে এ কথা আমরা আগেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মেট্রোকর্মীদের সুরক্ষার প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’
মেট্রো সূত্রের খবর, দমদম স্টেশনে কর্মরত এক মেট্রোচালক সম্প্রতি সংক্রমিত হয়ে তপন সিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর সহযোগী চালকদেরও কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে বলে মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, সংক্রমণ মোকাবিলায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।