প্রতীকী ছবি।
এমনিতেই করোনা সংক্রমণের দাপটে গত দেড় বছর ধরে সমস্ত স্বাভাবিক পরিষেবা কমবেশি বিপর্যস্ত হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে মশাবাহিত রোগ। পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির হিসেবে, ইতিমধ্যেই শহরে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে এক নতুন প্রজাতির মশা! যে নাকি আবার অসময়ের ডেঙ্গির বাহক বলেও জানাচ্ছেন পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ।
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর এলাকায় এডিস ভিট্টেটাস নামে এডিস মশার নতুন এক প্রজাতির সন্ধান মিলেছে। কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস শুক্রবার বলেন, ‘‘এন্টালিতে অবস্থিত পুরসভার মশা গবেষণা কেন্দ্রর বিশেষ খাঁচায় পূর্ণাঙ্গ মশার গবেষণা চালাতে গিয়ে গত বছরের শেষে নতুন এক প্রজাতির মশার লার্ভা পাই। বিশ্বে ৭০০ প্রজাতির এডিস মশা আছে। এডিস ভিট্টেটাস তারই একটি। এই মশার কামড়ে ডেঙ্গি হয়। পাশাপাশি এরা চিকুনগুনিয়া, পীত জ্বর এবং জ়িকা ভাইরাসেরও বাহক।’’
দেবাশিসবাবু জানান, শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে এন্টালির মশা গবেষণা কেন্দ্রে রেখে তাদের বড় করা হয়। এডিস ভিট্টেটাসের জন্মকাল সারা বছর। মূলত পাথরের গর্তে, গাছের কোটরে বা সিমেন্ট বাঁধানো চত্বরের জমা জলে এরা ডিম পাড়ে। পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, এদের ডিম এতই শক্তিশালী যে, পাথরের ছোট গর্তের জমা জলে চল্লিশ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং পাঁচ শতাংশ আপেক্ষিক আদ্রতাতেও সাড়ে চার মাস পর্যন্ত লার্ভা বেঁচে থাকে। এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে এই মশার প্রকোপ দেখা যায়।
মুখ্য পতঙ্গবিদ জানাচ্ছেন, মশার দেহে মাথা, বুক ও পেট এই তিনটি অংশ থাকে। এডিস ভিট্টেটাসের বুকে তিন জোড়া রুপোলি সাদা রঙের গোলাকার অংশ রয়েছে। যা দেখে মশাটিকে শনাক্ত করা হয়েছিল। এডিস ভিট্টেটাসের বড় বৈশিষ্ট্য, যে পরিবেশে ডেঙ্গি কম ছড়ায়, সেই পরিবেশেও এই মশা ডেঙ্গির ভাইরাসকে ধরে রাখতে সক্ষম।