পুরসভার কর রাজস্ব দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে কলকাতা পুর এলাকায় সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল ৮৫৮ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। প্রতীকী ছবি।
২০২২-’২৩ অর্থবর্ষ শেষ হতে বাকি আর তিন মাস। অতিমারির প্রভাব বেশ কয়েক মাস ধরে কম থাকলেও চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্তসম্পত্তিকর আদায়ে তেমন কোনও দিশা দেখাতে পারেনি কলকাতা পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ। তাই নতুন বছরের শুরু থেকে বাকি তিন মাস সম্পত্তিকর আদায়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে চলেছে পুরসভা। শহরে বকেয়া সম্পত্তিকরের পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। পুরসভা সূত্রের খবর, নতুন বছরের শুরুতে মোটা টাকার করখেলাপিদের নোটিস ধরানো থেকে শুরু করে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুর প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রের খবর,২০২১-’২২ অর্থবর্ষে কলকাতা পুরএলাকা থেকে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল ৮৮৪ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা। পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগ সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত গত বছরের তুলনায়সম্পত্তিকর বাবদ আদায় বাড়লেও তাতে সন্তুষ্ট থাকতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। কারণ, এখনও করখেলাপিদের নিয়ন্ত্রণেআনা যায়নি। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘নতুন বছরের শুরু থেকে মোটা টাকার করখেলাপিদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সম্পত্তিকর বাবদ টাকা না দিলে আইনি পথে হাঁটবে পুরসভা।’’
পুরসভার কর রাজস্ব দফতর সূত্রের খবর, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে কলকাতা পুর এলাকায় সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল ৮৫৮ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। ২০২০-’২১ সালে কোভিডের জন্য সম্পত্তিকর আদায় যথেষ্ট কমায় কর আদায়ের ক্ষেত্রে ওই অর্থবর্ষকে তুলনায়আনতে চায় না পুরসভা। সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত সম্পত্তিকর বাবদ আদায়ের পরিমাণ প্রায় ৮৮০ কোটি টাকা। পুর অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়,‘‘ডিসেম্বরের মধ্যেই গত আর্থিক বছরের আদায় পেরিয়ে যাব আমরা। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকতে চাইছি না। আগামী তিন মাস আদায় বাড়াতে আরও পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুরসভার আর্থিক মন্দা এখনও ঘোচেনি। দীর্ঘদিন ধরেঅবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা তাঁদের অবসরকালীন প্রাপ্য পাচ্ছেন না। পুরসভার আয় বাড়ানোর প্রধান উৎস সম্পত্তিকর বাবদ আদায়। তাই পুর কর্তৃপক্ষ আগামী তিন মাস কঠোর ভাবে অভিযান চালিয়ে আয়ের পরিমাণ বাড়াতে চান।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতিটি বরোয় আলাদা আলাদা দল গড়ে আদায়-অভিযানে নামবে পুরসভা। বিশেষত সংযুক্ত এলাকায় অনেক আবাসনের এখনও মিউটেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। মিউটেশন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আবাসনগুলি করের তালিকায় আসছে না। শহরে নিত্যনতুন আবাসন গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তিকর আদায়ে ফাঁক থেকে যাচ্ছে বলেই মত পুরসভার। সেই সমস্ত ফাঁক পূরণে জোর দিতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ।