প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসকেএম-এর বর্ধিত অংশ হতে চলেছে কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল। খুব শীঘ্রই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর।
৩০০ শয্যার এই হাসপাতাল এখন কার্যত খালি পড়ে থাকে। লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশকর্মীরা খুব কম ক্ষেত্রেই এখানে ভর্তি হন। বিমার সুবিধা নিয়ে বেশির ভাগই ভিড় জমান বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালটিকে কাজে লাগানোর জন্য বছর কয়েক আগে এখানে ঘটা করে ট্রমা সেন্টারের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজও এক চুল এগোয়নি। সাত জন ডাক্তার, চুক্তিভিত্তিক তিন জন আরএমও, এক জন অ্যানাস্থেটিস্ট, এক জন সার্জেন এবং এক জন ফিজিক্যাল মেডিসিনের ডাক্তার নিয়ে ধুঁকছে এই হাসপাতাল। গত আট বছরে প্রায় বারো-তেরো জন চিকিৎসক হয় অবসর নিয়েছেন, অথবা মারা গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের জায়গায় নিয়োগ হননি কেউ।
৩০০ শয্যার এই হাসপাতালে ১৫ শয্যার অফিসার্স ওয়ার্ড, ৭২ শয্যার সার্জিক্যাল ও মেডিক্যাল ওয়ার্ড রয়েছে। কিন্তু সবই কার্যত ফাঁকা পড়ে থাকে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত মেডিসিন, সার্জারি, চোখ, দাঁত, ফিজিক্যাল মেডিসিনের আউটডোর হয়। দু’টি অপারেশন থিয়েটারে গলব্লাডার, অ্যাপেন্ডিক্স, হার্নিয়ার অস্ত্রোপচারেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে রোগীর সংখ্যা এমনই তলানিতে এসে ঠেকেছে যে এই সব ব্যবস্থা কাজে লাগে খুবই কম। অথচ সামান্য দূরত্বে রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে থিকথিক করছে রোগীর ভিড়। শয্যার অভাবে সেখানে মেঝেতেও ঠাঁই দিতে হয় রোগীকে। এই দুই পরিস্থিতিতে ভারসাম্য আনতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
দু’ নম্বর বেণীনন্দন স্ট্রিটের ঠিকানায় বিশাল জায়গা জুড়ে এই হাসপাতাল। ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, প্লেগের মতো অসুখে পুলিশকর্মীদের চিকিৎসার জন্য ১৮৯৭ সালে আমহার্স্ট স্ট্রিটে ছোট আকারে হাসপাতালটির সূচনা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অবস্থান ও আয়তনের কথা মাথায় রেখে অনেক বেসরকারি হাসপাতালেরই ইদানীং নজর ছিল এ দিকে। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে তাই খুশি হাসপাতালের সব স্তরের কর্মীরাই। যদিও পুলিশ সার্জেন কিংশুক বিশ্বাস বা হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা কলকাতার যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অর্গানাইজেশন) চম্পক ভট্টাচার্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
হাসপাতালের ডাক্তাররা অবশ্য তাঁদের খুশি গোপন করেননি। জানিয়েছেন, ইন্ডোরে ৩০-৪০ জনের বেশি ভর্তি থাকেন না। সরকার উদ্যোগী হলে ফের তিনশো শয্যার হাসপাতালে প্রাণ ফিরবে।