—ফাইল চিত্র
আমপানে উপড়ে পড়া গাছ সরাতে বেগ পেতে হয়েছিল পুলিশ, দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। বড় বড় গাছের গুঁড়ি কাটা যে সহজ কাজ নয়, গত বছরই তা টের পেয়েছিলেন উদ্ধারকাজে নামা কর্মীরা। এ বার তাই আগেভাগেই বন দফতরকে তৈরি থাকতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
কলকাতা পুর এলাকার জন্য ২০টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি করেছে বন দফতর। প্রতিটি দলে ছ’জন করে গাছ কাটার লোক এবং দু’জন করে বনকর্মী থাকবেন। তাঁদের সঙ্গেই থাকবেন কলকাতা পুলিশের এক জন করে কর্মী। ওই ২০টি দলের মধ্যে ১৬টি দল থাকবে কলকাতা পুলিশের ন’টি ডিভিশনের ১৬টি থানায়। বাকি চারটি দল থাকবে লালবাজার এবং এ জে সি বসু রোডের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। প্রত্যেকটি দলের এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
এই দলগুলিকে পরিচালনার জন্য নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে রাজ্যের মুখ্য বনপাল (সদর) শুভঙ্কর সেনগুপ্তকে। ইয়াস-পরবর্তী পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং শীর্ষ বনকর্তারা এ দিন আলোচনা করেন। পরে বনকর্তারা জানান, আমপানের সময়ে উত্তরবঙ্গ থেকে গাছ কাটার লোক আনতে হয়েছিল। তাই এ বার আগেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বড় গাছ কাটায় দক্ষ শ্রমিকদের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।
অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের পরে শহরের যান চলাচল যাতে স্বাভাবিক রাখা যায়, তার জন্য রাজ্যের পূর্ত দফতর শহরে তাদের পাঁচটি ডিভিশনে ১৬টি কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করেছে। ওই দলগুলি গাছ কাটা ও রাস্তা সাফাইয়ের কাজ করবে। তাদের সঙ্গে থাকবে জেসিবি, ডাম্পার এবং গাছ কাটার যন্ত্রপাতি। এর জন্য প্রতিটি ডিভিশনে এক জন করে নোডাল অফিসার থাকছেন, যিনি পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলবেন। পুলিশের সাহায্য নিয়েই ওই কুইক রেসপন্স টিম রাস্তা পরিষ্কার করবে। গত বছর আমপানের পরে রাস্তায় পড়ে থাকা গাছ কাটা হলেও ডালপালা সব সরানো যায়নি।
আগামী কাল, বুধবার উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের। আবহাওয়া দফতরের অনুমান, কলকাতার উপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঘূর্ণিঝড়। ঝড়-পরবর্তী শহরকে কী ভাবে স্বাভাবিক রাখা যায়, তা নিয়ে রবিবারই বৈঠক করেছেন পুলিশ কমিশনার। ওই বৈঠকে ছিলেন সেনাবাহিনী, পুরসভা, সিইএসসি, সিভিল ডিফেন্স, কেএমডিএ এবং এনডিআরএফ-এর কর্তারা। সেখানেই ঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও পুনর্গঠনের কাজে সমন্বয় রাখার জন্য সব পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘ইউনিফায়েড কমান্ড সেন্টার’ বা বিশেষ কন্ট্রোল রুম তৈরির সিদ্ধান্ত হয় লালবাজারে। সোমবার বিকেলে যার উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
শহরের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আরও একটি কন্ট্রোল রুম চালু করছে লালবাজার। পুলিশের প্রতিটি ডিভিশনে এক জন করে এসি-র নেতৃত্বে বিরাট বাহিনীও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।