আবরণ: শরৎ বসু রোডের সেই বাড়ি ঘেরা হয়েছে সবুজ কাপড়ে। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির দেওয়ালে, গেটের কাছে চাতালে এখনও রক্তের দাগ! ছড়িয়ে রয়েছে ভাঙা ইট। পুলিশ-পিকেটও রয়েছে বিরাটির ২২ নম্বর শরৎ বসু রোডে কেয়া শর্মাচৌধুরীর (৫২) বাড়ির গেটে। গত শনিবার রাত ৮টা নাগাদ ফোনে কথা বলতে বলতে গেটের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময়ে পাশের পাঁচতলা নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটের ছাদের ইটের গাঁথনির একটি অংশ খসে পড়ে কেয়ার মাথায়। হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় দেড় বছর ধরে নির্মাণকাজ চলা ওই ফ্ল্যাটের নির্মাণগত সুরক্ষা নিয়ে সব চেয়ে বেশি সরব ছিলেন কেয়া নিজেই। বুধবার পুরসভার তরফে ফ্ল্যাটটি ফেন্সিং নেট দিয়ে ঘেরা হয়। এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলছেন, যে সুরক্ষার জন্য বহু বার বলা হয়েছিল, তা এখন করা হচ্ছে কেন? বাড়িটির নির্মাণ সামগ্রীর মান কেমন ও কতটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সেটি তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেয়ার স্বামী সুদীপ শর্মাচৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এই ফ্ল্যাট তৈরির জন্য রাস্তায় ও আমার বাড়ির চাতালে ফাটল ধরেছে। আগেও বহু বার উপর থেকে নির্মাণ সামগ্রী পড়েছে আমাদের বাড়িতে। বার বার বললেও আমল দেয়নি কেউ। এটা কি পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হল? আর যদি দুর্ঘটনাই হয়, তা হলে পরে যে গোটা আবাসনটাই ভেঙে পড়বে না, তার কোনও নিশ্চয়তা আছে?’’
স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনেকেই পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ওই নির্মাণ যেন বন্ধ করা হয়। সুদীপদের বাড়ির সীমানা থেকে মাত্র চার ফুট তফাতে এত বড় আবাসনের অনুমতি কী করে মিলল? যেখানে পুর এলাকায় গভীর নলকূপ বসানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, সেখানে সাবমার্সিবল পাম্প কী করে বসানো হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের দাবি, ‘‘বহুতলটি ঘেরা হয়েছে। আগামী দিনে বহুতল নির্মাণে সুরক্ষা-ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। নজরদারি শুরু হয়েছে।’’