—প্রতীকী চিত্র।
পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে এ বার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি থাকার অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট জমা দিল সিআইডি। গত সপ্তাহে বারাসত আদালতে ওই অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতির সঙ্গে দুর্নীতি দমন আইনের ৭ এবং ১৩ নম্বর ধারায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে সিআইডির তরফে।
গোয়েন্দারা জানান, অভিযুক্ত ওই কনস্টেবলের নাম পল্লব সরকার। তিনি কলকাতা পুলিশের এম আর বাঙুর হাসপাতালের পুলিশ আউটপোস্টে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন। নিউ টাউন থানা এলাকার এক বাসিন্দাকে পানশালার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে, ভুয়ো নথি দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে পল্লবের বিরুদ্ধে। গত মে মাসে নিউ টাউন থানার পুলিশ অভিযুক্তকে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার করে। জুলাই মাসে কলকাতা হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানিতে নিউ টাউন থানার পুলিশ তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয়। সিআইডি সূত্রের খবর, যা দেখে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ওই মামলার তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, তদন্ত নেমে তাঁরা জানতে পারেন, ওই পুলিশকর্মীর তিনটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে। অভিযোগ, ওই সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে তাঁরা দেখতে পান, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় দু’কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। সিআইডির অভিযোগ, ওই টাকা কোথা থেকে এল, তার কোনও বৈধ নথি অভিযুক্ত দেখাতে পারেননি। তাদের ধারণা, ওই টাকা পুরোপুরি হিসাব বহির্ভূত। এর পরেই চার্জশিটে সিআইডির তরফে দুর্নীতি দমন আইনের ধারা যুক্ত করা হয়।
সিআইডির তদন্তকারীরা জেনেছেন, অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার আগে দীর্ঘ সময় কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়েও তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু অভিযোগ, প্রভাবশালী হওয়ার দরুণ তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এক তদন্তকারী জানান, ওই অভিযুক্তের সব সম্পত্তি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। খতিয়ে দেখা হবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির হিসাবও। প্রয়োজনে ফের আদালতে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করা হবে।