প্রতীকী ছবি।
গুলি করে খুনের শাসানি দিয়ে শহরের এক নামী স্কুলের ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহ এবং যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল এক গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রীর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পরেই রাজীব চক্রবর্তী নামে ওই গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার
করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে দু’রাউন্ড কার্তুজও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তবে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র মেলেনি বলেই দাবি পুলিশের।
সোমবার রাতে রাজীবকে তাঁর নেতাজিনগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। বাড়িতেই গৃহশিক্ষকতা করেন অভিযুক্ত। পুলিশ জেনেছে, রাজীবের বিরুদ্ধে আগেও ছাত্রীদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। ধৃতকে মঙ্গলবার আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতে তোলা হয়। তাঁকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। গুলি উদ্ধার হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে নেতাজিনগর থানায় অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার বাসিন্দা ছাত্রীটি গত দু’ বছর ধরে বিজ্ঞান পড়তে যেত নেতাজিনগরের বাসিন্দা ওই গৃহশিক্ষকের বাড়িতে। পুলিশের দাবি, একলা বাড়িতে শিক্ষকতার আড়ালে অভিযুক্ত শিক্ষক বন্দুকের দু’টি গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন ছাত্রীটিকে যৌন নিগ্রহ করতেন। গত কয়েক মাস ধরেই ওই ঘটনা ঘটছিল।
পুলিশের কাছে ওই ছাত্রী অভিযোগে জানিয়েছে যে অভিভাবকদের অনুপস্থিতিতে বাড়িতে পড়াতে এসেও গৃহশিক্ষক তাকে যৌন নিগ্রহ করেছেন। এমনকি যৌন নিগ্রহের কথা জানাজানি হলে, তাকে গুলি করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ছাত্রীটির ব্যক্তিগত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েও ওই অভিযুক্ত তাকে যৌন নিগ্রহ করত বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন এ দিন কোনও কথা বলতে চাননি।
তদন্তকারীরা জানান, সম্প্রতি ওই ছাত্রীর কিছু আচরণে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল তার পরিবারের। পরে তাঁরা সব জানতে পেরে সোমবার বিকেলে ওই গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে বাঁশদ্রোণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। লালবাজার জানায়, বয়ান নথিভুক্ত করার পরে মঙ্গলবারই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে।
লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, ওই ঘটনায় পকসো আইন এবং যৌন নিগ্রহ ছাড়াও অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই দু’টি মামলাকে একত্র করে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত ওই মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দিতেও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।