পরিদর্শন: আনাজের চড়া দামের বিষয়টি দেখতে ঘুরছেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। সোমবার, সল্টলেকের এবি-এসি বাজারে। ছবি: স্নেহাশিষ ভট্টাচার্য।
আনাজের দাম অস্বাভাবিক হারে কেন বাড়ছে, তার কারণ খতিয়ে দেখতে সোমবার শহরের একাধিক বাজারে হানা দিলেন রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। তাঁরা বিক্রেতাদের জানিয়েছেন, কাঁচা লঙ্কার দাম কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা নয়, বিক্রি করতে হবে ১০০ টাকায়। সল্টলেকের বাজার ছাড়াও এ দিন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে হাওড়ার কালীবাবুর বাজার, কদমতলা বাজার, শিবপুর বাজার, সোনারপুর-রাজপুর এবং ব্যারাকপুরের কয়েকটি বাজার-সহ মোট ১৬টি বাজার পরিদর্শন করেন। আজ, মঙ্গলবার তাঁদের কলকাতার কোলে মার্কেটে যাওয়ার কথা।
আনাজের দাম বৃদ্ধিতে বেআইনি মজুতদারির ‘হাত’ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সল্টলেকের এবি-এসি মার্কেট, বিডি মার্কেট, সিকে মার্কেট ঘোরেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। এক সদস্য তথা ‘ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনস’-এর পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘উল্টোডাঙার পাইকারি বাজারে শনিবার লঙ্কা ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরো বাজারে ১০০ টাকার বেশি দাম হওয়ার কথা নয়। তাই লঙ্কা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বলেছি। চন্দ্রমুখী আলু কেজিপ্রতি ১৮ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না। সেটাও জানিয়ে এসেছি।’’
বেআইনি মজুতদারি রুখতে এ দিন হাওড়ার চারটি বাজারে হানা দেয় ইবি ও ‘ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনস’ বা এফটিও-র আধিকারিক-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একটি দল। হাওড়ার কালীবাবুর বাজার, কদমতলা বাজার, শিবপুর বাজার ও হাওড়া স্টেশনের আনাজ বাজারে পরিদর্শনের পরে ইবি-র আধিকারিক সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোথাও বেআইনি মজুতদারি পাইনি। তবে রবিবারের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। মঙ্গলবারের পরে আরও কিছুটা কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। স্থানীয় ভাবে দাম বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত গরম ও ভিন্ রাজ্য থেকে আমদানি কম হওয়াই দায়ী বলে মনে হচ্ছে।’’ আজ, মঙ্গলবারও একই ভাবে বিভিন্ন বাজারে ফের হানা দেওয়া হবে বলে জানান এফটিও-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পরিমল রায়চৌধুরী। এ দিন ইবি-র সঙ্গে ছিলেন হাওড়া সিটি পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকেরাও।
বাজার অগ্নিমূল্য হওয়ায় ক্রেতারাও আনাজ কেনার পরিমাণ কমিয়েছেন বলে জানান বিক্রেতারা। তবে এত কিছুর পরেও সব বাজারে লঙ্কার দাম কমেনি বলেই দাবি ক্রেতাদের। লেক মার্কেটের আনাজ বিক্রেতা ভোলা সাহার যদিও দাবি, লঙ্কার জোগান গত কয়েক দিন ধরে বেড়েছে। ফলে সাধারণ লঙ্কা ১০০ টাকা আর ভাল মানের লঙ্কা ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টোম্যাটোর দাম কেজি প্রতি ১৫০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকায়। ভোলাবলেন, ‘‘বেঙ্গালুরু থেকে গত কয়েক দিন ধরে কোনও কারণে টোম্যাটোর ট্রাক কম আসছিল। তাই দাম বেড়েছিল। ট্রাক নিয়মিত এলে জোগান ঠিক হবে। টোম্যাটোর দাম ১০০ টাকার নীচে দ্রুত নামবে বলেই আশা করি।’’ তবে বাকি আনাজ এখনও অগ্নিমূল্য। বিভিন্ন বাজারে ঢেঁড়শ ৬০-৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা দামে বিকোচ্ছে। আগামী ১০ দিনে সব আনাজের দাম অনেকটাই কমতে পারে বলে মত বিক্রেতাদের। তবে তার জন্য টানা বৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।