কসবা-কাণ্ডের জেরে টিকা শিবিরের জন্য কড়া নিয়ম রাজ্যের। —ফাইল চিত্র।
কসবা ভুয়ো টিকা-কাণ্ডের জের। টিকা শিবির গড়া নিয়ে এ বার কড়া নিয়ম বেঁধে দিল পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতর। সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, হাসপাতাল বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অথবা কোনও বেসরকারি সংস্থা, টিকা শিবিরের আয়োজন করতে গেলে, এ বার থেকে সংশ্লিষ্ট পুরসভার অনুমতি জোগাড় করতে হবে। ফোন নম্বর-সহ ওই শিবির সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জমা দিতে হবে। কী কী টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলির ব্যাচ নম্বর কত, সময়সীমাই বা কতদিন, বিশদে জানাতে হবে তা-ও। সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে যদি কোনও গরমিল না পাওয়া যায়, তবেই টিকা শিবির আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হবে।
এর আগে কসবার ভুয়ো টিকা শিবির নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাকে তুলে ধরেছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ সেই সময় জানিয়েছিলেন, টিকা শিবির করতে হলে পুরসভার অনুমতি বাধ্যতামূলক, কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় এমন কিছুর উল্লেখ নেই বলে জানান তিনি। কিন্তু তার পরেও বিতর্ক থামেনি। শহরের ব্যস্ত এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় কী ভাবে ভুয়ো টিকার শিবির চলল, শাসকদলের সাংসদ খোদ কী ভাবে প্রতারণার শিকার হলেন, তা নিয়ে প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসছিল লাগাতার।
এ সবের মধ্যেই শনিবার রাজ্য সরকারের টিকা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি জরুরি বৈঠক করে। ভুয়ো টিকাপ্রাপকদের স্বাস্থ্য নিয়ে সেখানে একটি রিপোর্ট জমা পড়ে। তাতে অল্পবিস্তর সমস্যা ছাড়া কারও শরীরেই গুরুতর সমস্যা পাওয়া যায়নি। সামান্য জ্বর হয়েছে যাঁদের, তাঁদের করোনা পরীক্ষা করোনানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই বৈঠকেই পুরসভার অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়। কসবা-কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এড়াতে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্যের সমস্ত পুরসভাগুলিকে সেই মর্মে নির্দেশিকাও পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, এ বার থেকে পুরসভা এলাকায় টিকা শিবির করতে গেলে সংশ্লিষ্ট পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। গ্রামীণ এলাকায় শিবির করতে গেলে অনুমতি জোগাড় করতে হবে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে। ব্লক ভিত্তিক শিবিরের ক্ষেত্রে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ)-এর অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, এত দিন কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যেত, কোউইনে নাম নথিভুক্ত না থাকলেও টিকা পেয়ে যেতেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের নাম লিখে রেখে পরে কোউইনে নাম তুলে দেওয়া হতো। কিন্তু এ বার থেকে নাম নথিভুক্ত করলে তবেই টিকা মিলবে।