—প্রতীকী চিত্র।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা মাকে দেখতে এসে ছেলে জানলেন, তিনি নিখোঁজ! যদিও সেই খবর রোগীর বাড়ির লোক বা পুলিশ— কাউকেই জানাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘুসুড়ির টি এল জায়সওয়াল হাসপাতালের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার এমনই অভিযোগ উঠল। তিন দিন ধরে কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি গোপনে রেখেছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলে হাসপাতাল সুপারকে প্রকাশ্যেই ধমক দিলেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল মালিপাঁচঘরা এলাকার বাসিন্দা, ৭৬ বছরের শকুন্তলা বর্মাকে। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে তাঁরা ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে দেখে গিয়েছিলেন। রবিবার বাড়ি থেকে কেউ আসতে পারেননি। সোমবার বিকেলে এসে শকুন্তলার পরিজনেরা দেখেন, মহিলা-মেডিসিন ওয়ার্ডের শয্যায় তিনি নেই। অভিযোগ, আশপাশের শয্যার রোগীরাও কিছু বলতে পারেননি। নার্সদের প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দেননি। শেষে লিলুয়া, মালিপাঁচঘরা, বেলুড় থানায় যান বৃদ্ধার পরিজনেরা। কিন্তু পুলিশ জানায়, হাসপাতাল থেকে নিখোঁজের বিষয়টি লিখে দিতে হবে। কিন্তু তা কী ভাবে মিলবে, তা নিয়ে পরিজনদের বিপাকে পড়তে হয় বলেঅভিযোগ।
সূত্রের খবর, রবিবার রাতে বৃদ্ধা জল আনার জন্য ওয়ার্ডের বাইরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তেতলা থেকে নেমে তিনি কী ভাবে নিরাপত্তারক্ষী ও হাসপাতালের কর্মীদের নজর এড়িয়ে বেরিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। ঘটনাটি সোমবার বিকেলে তাঁকে জানানো হয় বলে দাবি হাসপাতালের সুপার বীরেন্দ্রনাথ সোরেনের। তার পরেও কেন রোগীর পরিজন ও পুলিশকে তিনি সেই খবর জানাননি, উঠছে সেই প্রশ্নও। এ দিন হাসপাতালে গিয়ে সুপারের কাছে কৈফিয়ত চান রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কৈলাস মিশ্র। কেন তাঁকেও বিষয়টি জানানো হয়নি, তা জানতে চান। সুপারের দাবি, ঘটনাটি তিনি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, সুপার-সহ একাধিক কর্মীকে শো-কজ় করা হয়েছে। কৈলাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবায় জোর দিচ্ছেন। সেখানে হাসপাতাল থেকে রোগী নিখোঁজ হন কী ভাবে, জানতে চেয়েছি। যাঁদের গাফিলতি প্রমাণিত হবে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বৃদ্ধার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও।