JU Student Death

অত্যাচার হয়েছেই, কে বা কারা জড়িত সেটাই বার করতে হবে, স্বপ্নদীপের মৃত্যু নিয়ে কোর্টে বলল পুলিশ

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুতে ধৃত সৌরভের ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত। স্বপ্নদীপের উপর অত্যাচার হয়েছিল বলে জানালেন সরকার পক্ষের আইনজীবী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৫৭
Share:

স্বপ্নদীপ কুন্ডু (বাঁ দিকে)। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

র‌্যাগিংয়ের কারণেই কি প্রাণ গেল স্বপ্নদীপ কুন্ডুর? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে এই প্রশ্নই উঠেছে। র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ করেছে স্বপ্নদীপের পরিবার। শনিবার আলিপুর আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বললেন, ‘‘একটা অত্যাচারের গল্প পাচ্ছি। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার নামও উঠে আসছে। সঙ্গে আরও কয়েক জন জড়িত থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে।’’ তা হলে কি র‌্যাগিং তত্ত্বেই সিলমোহর মিলছে? যদিও ‘র‌্যাগিং’ শব্দটি উচ্চারণ করতে চাননি সরকারি আইনজীবী। তিনি ‘অত্যাচার’ (টর্চার) শব্দটিই বার বার উল্লেখ করেছেন।

Advertisement

দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আলোচনায় আবার উঠে এসেছে র‌্যাগিং। শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরীকে। শনিবার দুপুরে তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। আগামী ২২ অগস্ট পর্যন্ত সৌরভকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শনিবার আদলতে সৌরভের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, ‘‘সৌরভ স্বপ্নদীপের সহপাঠী, রুমমেট, বন্ধু নন। সৌরভের ফোন থেকে ফোনও করা হয়নি। যার ফোন থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেটা দেখা হোক। স্বপ্নদীপের বাবা সৌরভকে চিনতেন না। হয়তো ছেলের থেকে শুনেছেন।’’ আদালত থেকে বেরোনোর পর সংবাদমাধ্যমে সরকারি আইনজীবী জানান যে, ‘অত্যাচার’ হয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে সৌরিন বলেন, ‘‘বিভিন্ন পড়ুয়ার বয়ান যা পেয়েছি, একটা অত্যাচারের গল্প উঠে আসছে। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার নামও উঠে আসছে।’’ তা হলে কি র‌্যাগিং করা হয়েছিল স্বপ্নদীপকে? আইনজীবীর জবাব, ‘‘অত্যাচার হয়েছে।’’ ‘র‌্যাগিং’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি তিনি। যাদের বয়ান নেওয়া হয়েছে, তাঁরা হস্টেলের আবাসিক বলে জানিয়েছেন সৌরিন। আদালতে তিনি জানান, ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে হবে। দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি সৌরভের ফোন। অন্যটি স্বপ্নদীপের। কল ডিটেলস খতিয়ে দেখা হবে। এক জন জড়িত না কি আরও অনেকে জড়িত এই ঘটনায়, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

র‌্যাগিংয়ের কারণেই স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথম থেকেই সরব তাঁর পরিবার। স্বপ্নদীপের মামা অরূপ কুন্ডু অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘র‌্যাগিং অবশ্যই হয়েছে। র‌্যাগিং না হলে এমন কী করে হয়?’’ বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন সৌরভের নামও। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। তার পরই গ্রেফতার করা হয় সৌরভকে।

যদিও সৌরভের পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলে নির্দোষ। সৌরভের মা প্রণতি চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ। ওকে ফাঁসানো হয়েছে। স্বপ্নদীপের বাবা-মা ফাঁসিয়েছে। আমার ছেলের নাম বার বার নেওয়া হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, সৌরভ বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। বুধবার কী ঘটেছিল, সে ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না সৌরভ। আদালতে একই সুর শোনা গিয়েছে সরকার পক্ষের আইনজীবীর গলাতেও। তিনি জানিয়েছেন, সৌরভকে আগে ‘ব্রেক’ (মুখ থেকে আসল কথা বার করানো) করাতে হবে। তার পরই বিষয়টি অনেকটা স্পষ্ট হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement