কলকাতা ময়দান। —ফাইল চিত্র।
মেট্রো রেলের কাজের জন্য ময়দান এলাকায় নতুন করে কোনও গাছ কাটা যাবে না। শুক্রবার এই অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
ময়দান এলাকায় কাছ কাটার উদ্যোগের বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং মেট্রোর কাজের বরাদ্দ প্রাপ্ত সংস্থা ‘রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড’ (আরভিএনএল)-এর মতামত শুক্রবার জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষ ময়দান এলাকায় নতুন করে গাছ কাটতে উদ্যোগী হলে তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। কিন্তু গত ২০ জুন সেই জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আবেদনকারী পক্ষ। শুক্রবার বিচারপতি গাভাই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বলেছে, ‘‘তিন সপ্তাহ পরে আবার মামলার শুনানি হবে। তত দিন পর্যন্ত গাছ কাটা বা নতুন গাছ লাগানো যাবে না।’’ আরভিএনএল-এর আইনজীবীকে বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘‘আপনারা কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু একটিও গাছ যাতে কাটা না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কাজের জন্য ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায় ৭০০ গাছ কাটা পড়তে পারে, এই আশঙ্কা প্রকাশ করে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা’ নামে একটি সংগঠন। তাদের বক্তব্য, ময়দান এলাকা শহরের ফুসফুস। সেখানে এত গাছ কাটা হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে।
আবেদনে বলা হয়েছিল, ১৯৫০ সালের পর থেকে শহরের তাপমাত্রা এখন সব থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই গাছ কাটা বন্ধ করা হোক। গত বছরের অক্টোবরে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য এবং বিভাসরঞ্জন দে-র বেঞ্চ মেট্রোর কাছে জন্য নতুন করে গাছ কাটার উপর অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। নভেম্বরে স্থগিতাদেশের মেয়াদও বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু জুনে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে জানায়, গাছ কাটা হলেও আবার গাছ লাগানোর কথা জানিয়েছে আরভিএনএল। অথচ সেই তথ্য আদালতকে সঠিক ভাবে জানাননি মামলাকারী। তা ছাড়া উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করেছে নির্মাণ সংস্থা।