ফাইল চিত্র।
ময়দানের সবুজ কলুষিত করা এবং সেখানে বেআইনি পার্কিং নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি। সোমবার তিনি হাইকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করতেই নড়ে বসেছে লালবাজার।
সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে যাতে সেখানে বেআইনি পার্কিং বন্ধ হয়, সে জন্য বুধবার থেকেই সেখানে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা জারি হয়েছে। সকাল এবং দুপুরে এক জন করে ইনস্পেক্টরকে ময়দান দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই ইনস্পেক্টরের সঙ্গে পাঁচ জন করে সার্জেন্ট সেখানে থাকবেন। আইনভঙ্গকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে প্রতি দফায় দশ জন করে কনস্টেবলকে। এ ছাড়াও থাকছেন সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মী। ময়দানের ওই বাহিনী ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা দেখার জন্য লালবাজার এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারকে (এসি) প্রতিদিন ময়দানের দায়িত্বে রাখছে। তিনি ময়দানে কর্মরত পুলিশ আধিকারিক এবং বাহিনীর সদস্যদের উপরে নজর রাখবেন। বেশ কয়েক বছর আগেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ভিক্টোরিয়া এবং ময়দান চত্বরে গাড়ি রাখা যাবে না, সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না, তা-ও নজরে রাখবেন এসি।
লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা জানান, আদালতের রায়কে সম্মান জানাতেই ওই বাহিনী ময়দান জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে। গত সোমবার ময়দানের বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জাল দেখতে পান কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের ফুসফুসের ওই হাল দেখে ক্ষুব্ধ হন তিনি। ময়দানে যে ভাবে গাড়ি রাখা থাকে তা নিয়েও ক্ষুব্ধ বিচারপতি। এর পরেই তিনি হাইকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেন।
আজ, বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি আছে। সেখানে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানানো হবে। ময়দান দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনী, রাজ্য সরকার-সহ সব পক্ষকে শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
লালবাজার সূত্রের খবর, ময়দান নিয়ে গত দশকে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ নির্দেশ মেনেই এ দিন থেকে হসপিটাল রোড, কুইন্স ওয়ে, ডাফরিন রোড, ক্যাথিড্রাল রোড, মেয়ো রোড, খিদিরপুর রোড, রেড রোড, লাভার্স লেন-সহ ওই এলাকার সব রাস্তাতেই কঠোর নজরদারি চালানো হয়েছে। পার্কিং নজরে এলেই সেই গাড়ির বিরুদ্ধে কখনও ট্র্যাফিক আইনে মামলা রুজু হয়েছে, কখনও গাড়িটিকে রেকার দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ দিন ময়দানে দেখা গিয়েছে, গোটা চত্বরে ছড়িয়ে পুলিশ। কিছু দূর অন্তর নো-পার্কিং বোর্ড লাগানো রয়েছে। কোনও গাড়ি ময়দানে দাঁড় করালেই ছুটে আসছে পুলিশ। শীতে অনেকেই ময়দানে ঘুরতে আসেন। তাঁদের গাড়িও ময়দানে রাখতে দেওয়া হয়নি। লালবাজার জানিয়েছে, ঘুরতে আসা পর্যটকেরা যাতে ময়দান নোংরা না করেন, এ জন্য এ দিন থেকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভিড় এড়িয়ে মানুষ যাতে দূরত্ব-বিধি মেনে চলেন, সেই দিকেও খেয়াল রাখছেন ময়দান থানার আধিকারিকেরা।