সরকারি স্কুলগুলিও শুরু করতে চলেছে অনলাইন ক্লাস। প্রতীকী ছবি।
আগামী ২ মে রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে শুরু হতে চলেছে গরমের ছুটি। ছুটির পরে কবে স্কুল খুলবে, তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেবে শিক্ষা দফতর। তবে, এই লম্বা গ্রীষ্মের ছুটিতে পড়ুয়ারা যাতে পড়াশোনা থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে, তার জন্য সরকারি স্কুলগুলিও শুরু করতে চলেছে অনলাইন ক্লাস। একই সঙ্গে কিছু স্কুল জানিয়েছে, যে পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ বা সামর্থ্য নেই, তাদের অভিভাবকদের স্কুলে ডেকে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীর জন্য বাড়ির কাজ পাঠিয়ে দেবেন শিক্ষকেরা। পড়ুয়ারা সেই উত্তর লিখে অভিভাবকদের দেবে। তাঁরাই স্কুলে এসে তা জমা দিয়ে যাবেন।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানাচ্ছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই অনলাইন ক্লাসের রুটিন প্রস্তুত করে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে গরমের ছুটি চলার কথা ছিল ২৪ মে থেকে ২ জুন। ওই সময়টুকুর মধ্যে অনলাইনে ক্লাস হবে না। কিন্তু, ২ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আমরা অনলাইন ক্লাস নেব। এর পাশাপাশি, অনলাইনেই গল্প বলার আসর, শব্দ নিয়ে খেলা, কুইজ়— এমন নানা কিছু করা হবে।’’ পার্থপ্রতিম জানান, ২ মে থেকে ছুটি পড়ে যাওয়ায় একাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম শেষ করা নিয়ে সমস্যা হতে পারে। কারণ, একাদশের ফল এখনও প্রকাশিত হয়নি। ফল বেরিয়ে ছাত্রছাত্রীরা দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরেও ওদের দীর্ঘদিন ছুটি থাকবে। ফলে স্কুলে ক্লাস শুরু হবে না। তবে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অন্তত দ্বাদশের পড়াটা শুরু করা যাবে।
মিত্র ইনস্টিটিউশনের (ভবানীপুর) প্রধান শিক্ষক রাজা দে এবং যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদারও জানিয়েছেন, গ্রীষ্মাবকাশে হবে অনলাইন ক্লাস। অমিত বলেন, ‘‘কী ভাবে অনলাইনে ক্লাস হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে। বিশেষত, অঙ্ক, বিজ্ঞান, ইংরেজির মতো কিছু বিষয়ের অনলাইন ক্লাস হবে।’’ মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাসের পরিকাঠামো তো আমাদের আছেই। আগেও দীর্ঘ গরমের ছুটিতে অনলাইনে ক্লাস হয়েছে। এ বারও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক করে অনলাইন ক্লাসের রুটিন তৈরি করা হবে।’’
তবে, সব স্কুলের পড়ুয়াদের অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ বা সামর্থ্য নেই। তাদের কথাও ভেবেছেন সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, গত বছর গরমের ছুটিতে মাসে এক বার অভিভাবকদের ডেকে চাল, ডাল, আলু মিড-ডে মিল হিসাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এ বারও তেমন কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘অভিভাবকদের ডেকে তাঁদের হাতে পড়ুয়াদের জন্য হোম টাস্ক বা বাড়ির কাজ দেওয়া হবে। পরে এক দিন ওই হোম টাস্ক জমা নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, তাঁদের স্কুলের সব পড়ুয়ার অনলাইনে ক্লাস করার মতো পরিকাঠামো নেই। তাই এই ব্যবস্থা। তবে এর পাশাপাশি অনলাইনে পড়ানোও হতে পারে।