ছবি সংগৃহীত।
আবর্জনা থেকে কাগজ কুড়োতে গিয়ে বিস্ফোরণে জখম হলেন এক প্রৌঢ়। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে সরশুনা থানা এলাকার বাসুদেবপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম সইদুল নস্কর (৬৫)। তিনি পেশায় কাগজকুড়ানি। বাড়ি উস্তিতে হলেও থাকেন স্থানীয় বকুলতলায় একটি পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার দোকানে। গুরুতর জখম সইদুলকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে নমুনা সংগ্রহের জন্য আসে বম্ব স্কোয়াড।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ হঠাৎই বিকট আওয়াজে চার দিক কেঁপে ওঠে। অরুণ চট্টোপাধ্যায় নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, রাস্তার পাশে ট্রান্সফর্মার ফেটেছে। কিন্তু গিয়ে দেখি, এক বয়স্ক ব্যক্তি পড়ে রয়েছেন। আশপাশে ধোঁয়া। তাঁর মুখের ডান দিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে। হাতে-পায়েও চোট লেগেছে। তিনি ইশারায় জানালেন, আবর্জনার স্তূপ থেকে একটি বোতল কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। সেটি হাতে নিতেই বিস্ফোরণ ঘটে।’’ ঠিক পাশেই একটি আবাসনে থাকেন শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক মহিলা। তিনি বলেন, ‘‘এত জোরে আওয়াজ হয়েছিল যে, আমরা ভয় পেয়ে যাই। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারাই আহতকে এসএসকেএমে নিয়ে যান। কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে আসে পুলিশ।’’
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বম্ব স্কোয়াডের আধিকারিকেরা এসেছেন। সইদুল যে বস্তায় আবর্জনা থেকে জিনিস কুড়িয়ে রাখছিলেন, সেই বস্তায় সন্দেহজনক আর কিছু আছে কি না, খতিয়ে দেখেন তাঁরা। যে বোতল থেকে বিস্ফোরণ ঘটে, সেখানে পড়ে থাকা একটি ব্যাগে একই রকম আরও তিনটি বোতল পেয়েছেন তাঁরা। কিছু সরু তারও উদ্ধার করেছেন। ওই ভাঙা বোতলে রাসায়নিক কিছু পাওয়া গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে খবর। তিনটি বোতলই অ্যান্টি ব্লাস্ট ব্যাগে ভরে ব্যারাকপুর পিটিএসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ওই রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখা হবে। ঘটনাস্থলের কাছে যে সব ফ্ল্যাট বা বাড়ির সামনে সিসি ক্যামেরা আছে, সেই সব ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে, কে বা কারা ওই ব্যাগ ফেলে রেখে গেল।
এ দিকে, বাসুদেবপুরের মতো জনবহুল এলাকায় এমন বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, তাঁদের এলাকায় এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। যেখানে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার কাছেই রয়েছে স্কুল, পার্ক। স্কুলফেরত শিশুদের অনেকেই ওই রাস্তা দিয়ে রোজ যাতায়াত করে। সেখানে খেলাধুলোও করে। বাসিন্দারা মনে করছেন, বড় বিপদের হাত থেকে কোনও মতে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে।