—ফাইল চিত্র
সংস্কারের কাজের জন্য বছর দুয়েক আগে ছেদ পড়েছিল স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগের পরিষেবায়। কিন্তু আঠেরোর বিজ্ঞপ্তি বিশেও বহাল থাকায় অনিশ্চয়তায় ভুগছেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের ডিএনবি (ডিপ্লোম্যাট অব ন্যাশনাল বোর্ড) বিভাগের পড়ুয়ারা। বস্তুত, পশ্চিমবঙ্গে ডিএনবি কোর্সের অগ্রণী প্রতিষ্ঠান শম্ভুনাথে আদৌ সংশ্লিষ্ট কোর্সের পঠনপাঠনের জন্য উপযুক্ত আবহ-পরিকাঠামো মিলবে কি না, তা নিয়েই সন্দিহান এমডি-এমএসের সমতুল্য ডিগ্রির পড়ুয়ারা। যদিও এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পড়ুয়ারা ‘অহেতুক’ দুশ্চিন্তা করছেন।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের সংস্কারের জন্য স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগে সাময়িক ভাবে রোগী ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২৪ মাস কেটে যাওয়ার পরও পঠনপাঠনের কথা মাথায় রেখে কেন পরিষেবা চালু করা গেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চিকিৎসক পড়ুয়াদের বক্তব্য, সর্বভারতীয় স্তরে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাঁরা শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ডিএনবি’র বরাদ্দ আসনে ভর্তি হন। কিন্তু এখানে এসে দেখেন প্রসূতি বিভাগের শিক্ষার জন্য সবচেয়ে জরুরি লেবার রুমই নেই! সন্তানসম্ভবা মায়েদের বহির্বিভাগে দেখলেও প্রসবের জন্য তাঁদের অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে।
বিভাগীয় চিকিৎসকদের একাংশ জানান, স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগের পুনর্নির্মাণের কাজের জন্য গত বছর ডিসেম্বরে ওই বিভাগের পিজিটি’দের এম আর বাঙুরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এম আর বাঙুর পুরোপুরি কোভিড হাসপাতাল হওয়ার পরে সেই ব্যবস্থায় ইতি পড়েছে।
শুধু স্ত্রীরোগ এবং প্রসূতি বিভাগ নয়, হাসপাতালের অন্য বিভাগের পরিষেবাও সংস্কারের ঠেলায় থমকে রয়েছে বলে চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ। এসএসকেএমের অ্যানেক্স হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘শম্ভুনাথে চক্ষু, ফিজিক্যাল মেডিসিন, অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগেও ডিএনবি কোর্সের আসন ছিল। কিন্তু সেগুলিতে ছাত্র ভর্তি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এসএসকেএমের অ্যানেক্স হলেও শম্ভুনাথে যে সকল বিভাগ রয়েছে তা চালু রেখে বাড়তি পরিষেবা যুক্ত হবে বলে জানতাম। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না।’’ আর এক চিকিৎসকের বক্তব্য, এ বছর ডিপ্লোম্যাট অব ন্যাশনাল বোর্ডের সদস্যেরা পরিদর্শনে এলে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের সকল পরিকাঠামো রয়েছে জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তাহলে এখন এই অনিশ্চয়তা কেন? শম্ভুনাথের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের পড়ুয়া-চিকিৎসকদের সঙ্গে সহমত নন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের একাংশ। রাজ্যের অগ্রণী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের এক কর্তা জানান, ডিএনবি কোর্স নিয়ে যা বলা হচ্ছে তার সবটা ঠিক নয়। শম্ভুনাথের পড়ুয়াদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এসএসকেএমের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করে নেওয়া হয়েছে।