প্রতীকী ছবি।
সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা কবে শুরু হবে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। লিখিত পরীক্ষা ৪ মে শুরু হলেও প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষা শুরু হবে ১ মার্চ থেকে। প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষার দিন ঘোষণার পর থেকেই চিন্তিত এ বারের সিবিএসই বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থী এবং স্কুলের শিক্ষিকারা। পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, পয়লা মার্চ থেকে প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষা হলে আর দু’মাসও সময় বাকি নেই। করোনা অতিমারির কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় একটিও প্র্যাক্টিকাল ক্লাস হয়নি। এই অবস্থায় স্কুল খুলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্তত প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করতে দেওয়া হোক।
সিবিএসই বোর্ডের সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সরকার স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করলেই তাঁরা তা করতে প্রস্তুত। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “সমস্ত ক্লাস বিশেষ করে প্র্যাক্টিকাল ক্লাসগুলোয় স্যানিটাইজ়েশন নিয়মিত করা হয়। যারা আগামী বছর দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দেবে, তাদের প্র্যাক্টিকাল ক্লাস না হওয়ায় আমরা খুবই চিন্তিত। কারণ ওদের তো পয়লা মার্চ থেকে প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষা শুরু। আমরা তাকিয়ে আছি কবে সরকার স্কুলে এসে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করতে অনুমতি দেবে।”
মহাদেবী বিড়লার অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা আবার মনে করেন ফেব্রুয়ারি মাসেও যদি স্কুল খোলে, তা হলেও পয়লা মার্চের আগে কিছু প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করিয়ে নেওয়া যাবে। অঞ্জনাদেবী বলেন, “আমরা স্কুল খুলে প্র্যাক্টিকাল নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত। নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশনের কাজ হয় স্কুলে। সরকার অনুমতি দিলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করানো হবে।”
সিবিএসই বোর্ডের ডিপিএস রুবি পার্কের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী খুশি আগরওয়াল আগামী বার বোর্ডের পরীক্ষা দেবে। সে জানায়, স্কুলের ল্যাবরেটরিতে কোনও রকম অনুশীলন না করে সোজাসুজি প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষা দেওয়া খুবই কঠিন। খুশির কথায় “আমার এবং আমার সহপাঠী বন্ধুদের মনে হয় যদি পর্যায়ক্রমে ছাত্রীদের ডেকে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস করার সুযোগ মিলত তা হলে খুবই ভাল হত। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে পারতাম।” ডিপিএস রুবি পার্কের অধ্যক্ষা জয়িতা চৌধুরী বলেন, “কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষার দিন ঘোষণা করায় অনেকটাই চিন্তামুক্ত হওয়া গিয়েছে। আমাদের স্কুলে নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশনের কাজ করা হয়। আমরা এখন অপেক্ষায় আছি পরীক্ষা সংক্রান্ত ও স্কুল খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশের।”
তবে স্কুলের পরীক্ষাগারে প্র্যাক্টিকাল ক্লাস না হলেও অনলাইনেই কয়েকটি প্র্যাক্টিকাল ক্লাসও হয়েছে বলে জানালেন শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য। ব্রততী বলেন, “আমাদের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষিকারা স্কুলের প্র্যাক্টিকাল কক্ষে গিয়ে অনলাইন ক্লাস নিয়েছেন। তবে আরও ক্লাস দরকার আছে। রাজ্য সরকার স্কুলে পড়ুয়াদের আসার অনুমতি দিলে পড়ুয়ারা পয়লা মার্চের আগে স্কুলে এসে কয়েকটি প্র্যাক্টিকাল ক্লাস অন্তত করতে পারবে।”
কিন্তু কবে স্কুল খুলবে সেই নিয়ে কিন্তু কোনও রকম আভাস দেয়নি শিক্ষা দফতর। ডিসেম্বর মাসে কলেজ খোলার কথা প্রথমে ঘোষণা করা হলেও পরে তা পিছিয়ে যায়। এখনও কলেজ খোলার কথা কিছুই জানানো হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বার বার জানিয়েছেন, যা হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই হবে। পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সব সময়ে। স্কুল খোলার বিষয়ে পার্থবাবু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, “রাজ্যের স্কুলগুলিকে স্যানিটাইজ় করার কথা বলা হয়েছে। স্কুল খোলার বিষয়ে প্রস্তুত থাকার জন্যই স্যানিটাইজ়েশনের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।”