—প্রতীকী ছবি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে প্রশ্নপত্র দেখা যাচ্ছে। যা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। তবে উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যা করা হচ্ছে, পড়ুয়াদের ভালর জন্যই করা হচ্ছে।
গোটা মার্চ মাস ধরে চলবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের অড সিমেস্টারের পরীক্ষা। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে তৃতীয় এবং পঞ্চম সিমেস্টারের পরীক্ষা। কয়েক দিন পরেই শুরু হবে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা। পরীক্ষা হচ্ছে ডিজিটাল এবং অনলাইন মাধ্যমে। বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিয়ে ছাত্রছাত্রীরা উত্তরপত্র অনলাইনে কলেজকে জমা দেবেন। পরীক্ষা শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে ইমেল মারফত প্রশ্নপত্র পাঠাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজগুলি পরীক্ষা শুরুর আগে তা তাদের পোর্টালে আপলোড করে দিচ্ছে। সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র দেখতে পাচ্ছেন পড়ুয়ারা। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের পোর্টালেও প্রশ্নপত্র আপলোড করে দিচ্ছে। ৬৫ নম্বরের পরীক্ষার জন্য সময় বরাদ্দ হয়েছে তিন ঘণ্টা।
সোমবার পরীক্ষা শুরুর দিনেই অভিযোগ ওঠে, সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হলে সাড়ে ন’টাতেই পরীক্ষার্থী-সহ সকলে প্রশ্নপত্র দেখতে পাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে। পরীক্ষা দুপুর দু’টোয় হলে দেড়টাতেই প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে দেখা যাচ্ছে। অথচ ইউজিসির নির্দেশ, প্রশ্নপত্র ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোড করার জন্য মোট আধ ঘণ্টা সময় পাবেন পরীক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দ্বিতীয়ার্ধের পরীক্ষা দুপুর দু’টো থেকে শুরুর আগে ১টা ৩৮ মিনিটে এ বিষয়ে উপাচার্যকে স্ক্রিনশট এবং কয়েকটি প্রশ্ন পাঠানোর পরে তিনি জানান, ১৭১ সেট প্রশ্নপত্র আপলোড করতে হচ্ছে। তাই অনেক আগে থেকেই এই প্রশ্নপত্র আপলোডের কাজ শুরু করতে হচ্ছে। এর জন্য হয়তো একটু আগে থেকে পড়ুয়ারাও প্রশ্ন দেখতে পাচ্ছেন। উপাচার্য বলেন, ‘‘অনেক কলেজ কর্তৃপক্ষই নিজেদের পোর্টাল খুব ভাল নয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইটকে প্রশ্নপত্র দেখার জন্য লিঙ্ক করে দিচ্ছেন। অনেকে একসঙ্গে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করছেন বলে সময়ও বেশি লাগছে। তাই এর জন্য একটু আগে প্রশ্নপত্র আপলোড করা হলে তা করা হচ্ছে পড়ুয়াদের ভালর কথা ভেবেই।’’
যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় অবশ্য বলেন, ‘‘এই পরীক্ষা নামেই পরীক্ষা। আসলে পরীক্ষার নামে প্রহসন চলছে।’’
এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অনলাইন পরীক্ষার নানা ত্রুটি দেখিয়ে ক্যাম্পাসে এসে অফলাইন পরীক্ষার দাবি জানানো হয়েছে। শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, এ ভাবে বাড়িতে বসে পরীক্ষায় কেউ উত্তর লিখে দিচ্ছেন কি না অথবা সেই পরীক্ষার্থীকে কেউ লিখতে সাহায্য করছেন কি না— সে সব নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কোনও স্বচ্ছতাই থাকছে না। এর সঙ্গে প্রশ্নপত্র যদি আধ ঘণ্টা আগে পড়ুয়ারা পান, তা হলে উত্তর লেখার জন্যও তাঁরা অনেক বেশি সময় পেয়ে যাচ্ছেন। যদিও বেশ কয়েক জন অধ্যক্ষের বক্তব্য, অনেক পড়ুয়ার ইন্টারনেট পরিষেবা ভাল নয়। বিশেষত সুন্দরবন-সহ বেশ কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট অত্যন্ত ধীরগতির। আগে প্রশ্নপত্র আপলোড হলে তা দেখতে ওই পড়ুয়াদের কিছুটা সুবিধা হয়।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে লগ-ইন করে পরীক্ষা শুরুর আগে পড়ুয়ারা প্রশ্নপত্র দেখতে পারছেন। কিন্তু অন্যেরা তা দেখতে পাচ্ছেন না। বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা শুরুর সময় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে প্রশ্ন।