যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
ক্যাম্পাসে মদ এবং মাদক সেবন কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ করা-সহ তিনটি বিজ্ঞপ্তি বুধবার জারি করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘অগণতান্ত্রিক’ ভাবে সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিদায়ী ছাত্র সংসদ (ফেটসু)। এর পাশাপাশি, অবিলম্বে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করারও দাবি জানিয়েছে তারা।
মদ এবং মাদক সেবন নিষিদ্ধ করা বিষয়ক বিজ্ঞপ্তির পাশাপাশি বুধবার অন্য দু’টি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ক্যাম্পাসে পঠনপাঠনের বাইরে কোনও ধরনের বাণিজ্যিক কার্যকলাপ করা যাবে না। ক্লাস চলাকালীন ব্যবহার করা যাবে না লাউডস্পিকার। ফেটসুর দাবি, সকলের সঙ্গে আলোচনা না করে অগণতান্ত্রিক ভাবে কর্তৃপক্ষ এই সব বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন নিজের দফতর থেকে নেমে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস অন্য বিভাগে যেতে গিয়েও বিক্ষোভের জন্য পারেননি। শেষে সন্ধ্যার দিকে তাঁকে দফতর ছেড়ে যেতে দেওয়া হয়। তিনটি বিজ্ঞপ্তির মধ্যে দু’টি বিজ্ঞপ্তি জারির ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় ওই দু’টি প্রত্যাহারও করা হয়েছে। তবে উপাচার্য জানিয়েছেন, মদ ও মাদক নিষিদ্ধ করা বিষয়ক যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, সেটি বাতিল করা হবে না। তিনি আরও জানান, কর্মসমিতির পরবর্তী বৈঠকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি আলোচনা করা হবে। প্রসঙ্গত, রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। মাসকয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁরা ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে আগ্রহী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও নির্দেশ আসেনি।
যাদবপুর ক্যাম্পাসে মদ, মাদক সেবন নিয়ে বিতর্ক বহু দিন ধরে চলছে। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই মদ ও মাদক সেবনকারীদের হাতে শিক্ষক, শিক্ষিকা বা গবেষকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করছে। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য যে কোনও উদ্যোগের পক্ষে আছি।’’ ফেটসুর সাধারণ সম্পাদক গৌরব দাস এ দিন বলেন, ‘‘যে সিদ্ধান্তই নেওয়া হোক, সব পক্ষের মতামত নিয়েই নিতে হবে।’’ তিনি জানান, নির্বাচনের দাবি থেকেও তাঁরা নড়বেন না।
অন্য দিকে, এ দিন ফি দেওয়া নিয়ে ছাত্র-বিক্ষোভ হয় উত্তর কলকাতার ক্ষুদিরাম বসু সেন্ট্রাল কলেজে। পরে কলেজের ফিনান্স কমিটি বিষয়টির সমাধানে বৈঠকে বসে। যদিও পড়ুয়াদের দাবি, সমস্যা পুরো মেটেনি। অধ্যক্ষ সুবীর দত্তকে ফোন ও মেসেজ করেও কথা বলা যায়নি।