রুদ্ধ: এগারো মাস পরে খুলল স্কুল। কিন্তু বন্ধ সমর্থকেরা গেট আটকে রাখায় পথেই পড়ুয়ারা। শুক্রবার, যাদবপুর বিদ্যাপীঠে । ছবি: সুমন বল্লভ
অভিভাবকদের জোরালো দাবির কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানলেন বন্ধ সমর্থকেরা। যাদবপুর বিদ্যাপীঠে ঢোকার মুখে স্কুলের গেট আটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন বন্ধ সমর্থকেরা। কিন্তু শেষমেশ তাঁদের সরে যেতে হল।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ওই স্কুলের গেটের সামনে ঝাণ্ডা হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েক জন বন্ধ সমর্থক। স্লোগান দিচ্ছিলেন বন্ধের সমর্থনে। এ দিকে, এগারো মাস পরে স্কুল খোলায় বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ সেখানে পৌঁছে যায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে তারা ধর্মঘটীদের সরে যাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকে। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অনির্বাণ বেরা বলল, ‘‘এখনও একটিও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হয়নি। এক দিনের ক্লাস নষ্ট মানে অনেক ক্ষতি। বন্ধটা স্কুল খোলার দিনেই ডাকতে হল?’’ পাশে দাঁড়ানো অনির্বাণের মা মিঠু বেরার কথায়, ‘‘রাস্তা বন্ধ বলে ৮-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে হাঁটতে হাঁটতে এসেছি।’’
বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে বাড়িই ফিরে গেল ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা, নবম শ্রেণির ছাত্র অনুভব দত্ত। তার কথায়, ‘‘এত দিন পরে স্কুলের সামনে এসে এই অবস্থা দেখে খুবই আশাহত হয়েছি।’’ স্নেহা মণ্ডল নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী বলল, ‘‘অনলাইন ক্লাসে তো নানা ধরনের অসুবিধা হত। আজ স্কুলে এসে ক্লাস করব বলে মুখিয়ে ছিলাম। ক্লাস কি আদৌ হবে?’’
সময় যত গড়াচ্ছিল, স্কুলের সামনে ভিড়ও ততই বাড়ছিল। ১১টার কিছু পরে স্কুলের গেটের সামনে আসেন প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। তত ক্ষণে আন্দোলনকারীদের স্লোগান ছাপিয়ে স্কুলে ঢুকতে দেওয়ার দাবি ক্রমশ জোরালো হতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত রণে ভঙ্গ দিয়ে বন্ধ সমর্থকেরা সরে যান স্কুলের গেট থেকে।
প্রধান শিক্ষক পরিমলবাবু বললেন, ‘‘খুব কম সময়ের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অনেকগুলো প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস নিতে হবে।
তাই এই সময়ে এক দিন ক্লাস নষ্ট হলেও অনেকটা ক্ষতি হয়ে যাবে। সেই কারণেই পড়ুয়াদের স্কুলে ঢুকতে দিতে অনুরোধ করেছিলাম বন্ধ সমর্থকদের কাছে। ওঁরা আমার কথা মেনে নিয়ে সরে গিয়েছেন। তাই আর কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।’’
এ দিকে, কলেজ স্ট্রিট চত্বরে বন্ধ সমর্থকেরা রাস্তা অবরোধ করলেও সেখানকার হিন্দু, হেয়ার ও সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।