প্রতীকী ছবি
লকডাউন পর্বে দীর্ঘ দু’মাস রোজগার ছিল না অ্যাপ-ক্যাব চালকদের। লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দিনে ১৫০-২০০ টাকার বেশি আয় হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের। এই অবস্থায় সোমবার রাতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এক অ্যাপ-ক্যাব চালকের। পুলিশের ধারণা, ঋণের ভারে জর্জরিত হয়েই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। মানিকতলা থানার নতুনপল্লির বাসিন্দা ওই যুবকের নাম গোপাল হালদার (২৮)।
গোপাল দৈনিক বন্দোবস্তে অন্য এক জনের গাড়ি চালাতেন বলে খবর। আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক ব্যক্তিগত ঋণ থাকায় তাঁর উপরে প্রবল মানসিক চাপ তৈরি হয়েছিল বলে পরিবারের দাবি। বাড়িতে গোপালের স্ত্রী, দু’বছরের ছেলে ছাড়াও ভাই, মা ও দিদি রয়েছেন। সোমবার রাতে বাড়িতেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মৃতের ভাই গোবিন্দও অ্যাপ-ক্যাব চালান। তাঁর কথায়, ‘‘আয় কমে যাওয়ায় মানসিক চাপে ছিল দাদা। কিন্তু এমন পথ বেছে নেবে, ভাবতে পারিনি।’’
মঙ্গলবার ওই অ্যাপ-ক্যাব চালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে সিটু অনুমোদিত অ্যাপ-ক্যাব সংগঠন। ওই সংগঠনের সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির পরে খুবই চাপে আছেন অ্যাপ-ক্যাব চালকেরা। অনেকেই কিস্তির টাকা মিটিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে কমিশনের হার কমাতে বললেও তা মানা হচ্ছে না।’’
আরও পড়ুন: গাছের ডাল ও গুঁড়িতে এখনও রুদ্ধ নিকাশি, ক্ষোভ হাওড়ায়
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই চালকের মৃত্যুর ঘটনা আমরা পরিবহণ দফতর ও অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাকে জানিয়েছি। সংস্থার কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানানো হয়েছে।’’ তাঁদের সংগঠনের তরফে ওই চালকের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান ইন্দ্রনীলবাবু।
অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি নিজেদের কমিশনের হার কমানো নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। প্রত্যেক যাত্রায় ভাড়ার প্রায় ২৫ শতাংশ পায় সংশ্লিষ্ট অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা। তাদের অবশ্য দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে চালকদের জন্য একাধিক সামাজিক প্রকল্প আনা হচ্ছে।