—ফাইল চিত্র
কলকাতা পুরসভার কোনও দফতরে কর্মীর আধিক্য, কোথাও আবার রয়েছে ঘাটতি। যার জেরে পুর পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক অপচয়েরও অভিযোগ উঠছিল। এ সবের সমাধানে স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা জানতে সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু পুরসভার নিজস্ব সমীক্ষায় সেই সমস্যা মিটবে না বলেই অভিযোগ উঠেছিল পুর-অন্দরে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার জন্য স্টাফ রিস্ট্রাকচারিং বা কর্মী পুনর্বিন্যাস কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। ওই কমিটিকেই দেড় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এর পরেই পুর কমিশনার খলিল আহমেদের নির্দেশে সম্প্রতি পার্সোনেল দফতরের তরফে প্রতিটি পুর দফতরকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোন দফতরে কত অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার, স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন তা জানাতে হবে। রাজ্য সরকারের ওই কমিটিতে রয়েছেন রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তিন অফিসার এবং কলকাতা পুরসভার অর্থ এবং পার্সোনেল দফতরের দুই কর্তা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভার স্থায়ী কর্মী বাইশ হাজারের মতো। এ ছাড়াও হাজার কুড়ি অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। তা সত্ত্বেও কর্মীর অভাব নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে এত কর্মীর প্রয়োজন কেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। এক সময়ে পুরসভায় ৩০ হাজারের মতো স্থায়ী কর্মী ছিলেন। তখন কাজ হাতে হাতে করতে হত। এখন কম্পিউটার আসায় এক জনের পক্ষে অনেক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। সুতরাং কর্মী কম হওয়াই বাঞ্ছনীয় বলে দাবি পুরসভার একটি অংশের। অভিযোগ, দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতাসীন বোর্ডের ‘চাপে’ কর্মী বাড়ানো হয়েছে। এমনকি পুরসভার নিজস্ব দফতরের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হওয়ায় সরকারি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই সরকারি কমিটি মনে করলে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে আলাদা সমীক্ষা করাতে পারে।
রিপোর্ট পাওয়ার পরেই কমিটি বৈঠকে বসবে বলে জানা গিয়েছে। এর পরেই রাজ্য সরকারের মতো কলকাতা পুরসভাতেও সমকাজ সম্পন্ন একাধিক দফতরের সংযুক্তিকরণ হতে পারে। যেমন, পুরসভার টাউন প্ল্যানিং (টিপি) এবং প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিডি) যুক্ত হয়েছে। তেমন বিনোদন ও কার পার্কিংকে একই দফতরে আনার ভাবনা রয়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘‘কোথাও বেশি, কোথাও কম কর্মী থাকলে ক্ষোভ বাড়ে। তাই কাজের পরিধির কথা ভেবে সমতা আনা হবে।’’
পুরসভার একাধিক অফিসারের বক্তব্য, কিছু ক্ষেত্রে নতুন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। যেমন, পুরসভার অনেক গাড়ি রয়েছে, তা মেরামতের জন্য মিস্ত্রিও রয়েছেন। এখন অনেক আধুনিক গাড়ি এসেছে, যা সারাইয়ে সেই কাজ জানা মিস্ত্রি দরকার। জাতীয় পরিবেশ আদালতের কথা ভেবে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশ বিজ্ঞানীও নিয়োগ করার কথা ভাবছে পুরসভা। সে সবও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কমিটি।