ফাইল চিত্র।
বিধাননগরের বনবিতানকে (সেন্ট্রাল পার্ক) আকর্ষণীয় ইকো-টুরিজ়ম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। যার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রস্তাবিত ইকো-টুরিজ়ম কেন্দ্রে সেলফি, ফটো শুটিং পয়েন্ট, নতুন গাড়ি রাখার জায়গা থেকে শুরু করে বোটিংয়ের সুবিধা ও জলের পাশে কফি শপ-সহ একাধিক ব্যবস্থা থাকবে। যাতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প থেকে রাজস্বও আদায় করা যায়। রাজ্য সরকারের বন দফতরের অধীনস্থ ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লিউবিএফডিসি) ওই পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে।
যদিও পরিবেশকর্মীদের একাংশ ওই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রস্তাবিত প্রকল্পের কারণে বনবিতানের সবুজের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। কারণ, এর আগে রডন স্কোয়ারকে সাজাতে গিয়ে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে সেখানকার সবুজ ধ্বংসের পাশাপাশি দূষণের অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় পরিবেশ আদালতে তা নিয়ে মামলাও হয়েছিল। যার পরিপ্রেক্ষিতে রডন স্কোয়ারে পার্কিং লট তৈরির কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। শেষ পর্যন্ত পুরসভার তরফে ওখানে পরিবেশবান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে এক পরিবেশকর্মী বলছেন, ‘‘বনবিতানের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হলে তা স্বাগত। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, এ ধরনের কাজে পরিবেশের ক্ষতিটাই বেশি হয়ে যায়।’’ পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘আমাদের রাজ্যের সমস্যা হল, পরিবেশকে এখানে সব সময়ে সব কিছুর পরে রাখা হয়। বাকি অন্য সব কিছু সব সময়ে অগ্রাধিকার পায়। সেই কারণে এই ধরনের প্রকল্পের ক্ষেত্রে আশঙ্কা থেকেই যায়।’’
যদিও ডব্লিউবিএফডিসি-র তরফে জানানো হয়েছে যে, এই আশঙ্কা অমূলক। ওই সংস্থার ‘গ্রিন প্রজেক্ট উইং’-এর এক্স অফিসিয়ো ম্যানেজার রামপ্রসাদ বাদানা বলছেন, ‘‘ওখানে এমন কিছু করা হবে না যাতে সবুজ বা পরিবেশের ক্ষতি হয়। বর্তমানে ওখানে যা যা পরিকাঠামো রয়েছে, সেগুলিরই উন্নয়ন করা হবে। পুরোটাই করা হবে পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, এত দিন বনবিতান ছিল ‘ফরেস্ট ডিরেক্টরেট’-এর অধীনে। কিন্তু ওখানে প্রস্তাবিত প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ডব্লিউবিএফডিসি-র তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সব দিক খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার বনবিতানের কাজকর্ম ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি সংস্থার হাতে তুলে দেয়।
তবে প্রকল্পটির বাস্তবায়নের জন্য সংস্থার বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রশাসনিক কাজকর্ম-সহ অন্য খাতে ব্যয়ের বিষয়টি আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত ফরেস্ট ডিরেক্টরেট-ই বহন করবে। এ বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে আগামী দু’মাসের মধ্যে কমিটি একটি রিপোর্ট তৈরি করবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।