ফুটপাতে তারের জট করুণাময়ীতে। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক এবং নিউ টাউনের অধিকাংশ জায়গায় মাটির নীচ দিয়ে কেব্ল নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। অথচ, তারের জঙ্গল থেকে আজও মুক্তি পায়নি সল্টলেক। বুধবার বৈশাখী মোড়ের কাছে এক পথ দুর্ঘটনায় বাইকচালক শুভম ধরের মৃত্যুর পরে ফের সেই সমস্যার কথা সামনে এসেছে।
যদিও বিধাননগরের এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ওই মোটরবাইকটি পিছলে যাওয়ার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে পড়ে থাকা তারের কারণেই বাইকটি ওই ভাবে পিছলে গিয়েছিল কি না, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এক সময়ে বিধাননগরে মাটির নীচ দিয়ে কেব্ল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল। তৎকালীন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সেই ভাবনার কথা জানালেও বাস্তবে তা আজও কার্যকর করা যায়নি। তাই তারের জট যে আজও সল্টলেকের একটা বড় সমস্যা, সে কথা স্বীকার করছেন বিধাননগর পুরসভার আধিকারিকেরা। এমনকি, ওই তারের জটের কারণে বেশ কিছু বাতিস্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও পুরসভা সূত্রের খবর।
সল্টলেকে একটু ঘুরলেই দেখা যায়, তিনটি সেক্টরের প্রতিটি রাস্তাতেই বাতিস্তম্ভ বা গাছ থেকে ঝুলছে কেব্লের জট। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আমপানের পরে বহু বাতিস্তম্ভ থেকে কেব্ল খুলে বা ছিঁড়ে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে রাস্তার উপরে। কোথাও কোথাও ফুটপাত ও রাস্তা জুড়ে পড়ে রয়েছে কেব্ল, যা বাড়াচ্ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। জিডি ব্লকের আবাসিক সমিতির এক কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধুর কথায়, ‘‘সল্টলেকের বহু জায়গায় এখনও বাতিস্তম্ভ থেকে ঝুলছে ছেঁড়া কেব্ল। তাই বিকল্প পথে কেব্ল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।’’
যদিও কেব্ল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, সল্টলেকে ঝড়ের সময়ে যে সমস্ত তার ছিঁড়ে বা খুলে গিয়েছিল, তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে সার্বিক ভাবে কেব্ল নিয়ে যেতে বিকল্প পথের প্রয়োজনীয়তার কথা মানছেন তাঁরাও। সল্টলেকে কেব্ল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী সুজয় সাহা জানান, মাটির তলা দিয়ে কেব্ল নিয়ে যাওয়া গেলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। কিন্তু তা বিপুল ব্যয়সাপেক্ষ। তাই প্রশাসন এবং এই ব্যবসায় যুক্তদের একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।
যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটির তলা দিয়ে কেব্ল নিয়ে যাওয়ার জন্য বিপুল ব্যয়ের পুরোটাই একা পুরসভার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। বিধাননগরের পুর প্রশাসক কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কেব্ল ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদেরও সতর্ক হতে হবে। এর আগেও ব্যবসায়ীদের ডেকে বার বার বলা হয়েছে। আগামী দিনেও কেব্ল অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা হবে। বিকল্প পথের ব্যয়ভার অনেক। সেই বিষয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’