প্রতীকী চিত্র।
প্রায় ধুঁকতে থাকা জাহাজ তৈরি এবং মেরামতির কারখানা শালিমার ওয়ার্কস লিমিটেডের হাল ফেরাতে তৎপর হচ্ছে রাজ্য সরকার। সোমবার ওই কারখানা পরিদর্শন করে একাধিক পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শতাধিক বছরের পুরনো ওই কারখানা পর্যাপ্ত কাজের বরাতের অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যায়।
এ দিন মন্ত্রী জানান, কারখানায় পড়ে থাকা ছোট লঞ্চগুলি মেরামত করে জলপথে প্রমোদভ্রমণের কাজে ব্যবহার করার কথা ভাবছে সরকার। পাশাপাশি, বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহযোগিতায় জলপথ পরিবহণকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই কাজে যে সব জলযানের প্রয়োজন হবে, সেগুলি নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে শালিমার ওয়ার্কসকে কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তা-ও সরকার বিবেচনা করছে। এর জন্য রাজ্য পরিবহণ নিগমের ডিরেক্টর রাজনবীর সিংহ কপূরকে ওই কারখানার চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত এক বছরে অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য পরিবহণ নিগম জলপথে ভেসেল ব্যবহার করে একাধিক প্রমোদভ্রমণের ব্যবস্থা করেছে। তার অনেকগুলি জনপ্রিয়ও হয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়েই এ বার শালিমার ওয়ার্কসের পুনরুজ্জীবনের রাস্তা খুঁজছে সরকার।
১৮৮৫ সালে টার্নার মরিসন প্রতিষ্ঠিত এই জাহাজ তৈরির কারখানাটি রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করে ১৯৮০ সালে। বিভিন্ন সময়ে এই কারখানা থেকে নৌবাহিনীর জন্য ৬০০টি জাহাজ তৈরি করে সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়াও যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণের ভেসেল, বার্জ, বন্দরে বড় জাহাজ টেনে আনার টাগ বোট-সহ একাধিক জলযান তৈরির পরিকাঠামো রয়েছে এখানে।
এ দিন শালিমার ওয়ার্কস পরিদর্শন করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এই কারখানার যে পরিসর এবং পরিকাঠামো আছে, তাতে নতুন কাজের বরাত পেলেই ফের ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’’ তিনি জানান, রাজ্য পরিবহণ দফতরের অনেক ভেসেল মেরামতির জন্য প্রায়ই ঠিকাদার সংস্থা বা অন্য দফতরের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। সেই সব কাজ এখানে করার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া, কলকাতা বন্দর, গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের সহযোগী সংস্থা হিসেবে কী ভাবে আরও নতুন কাজের বরাত পাওয়া যায়, তারও পরিকল্পনা করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘কারখানার হাল ফেরাতে বাইরের সংস্থার জলযান নির্মাণ এবং মেরামতির কাজ ছাড়াও এখানে পড়ে থাকা অব্যবহৃত লঞ্চগুলিতে বাতানুকূল যন্ত্র বসিয়ে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে আয় বাড়বে।’’ একই সঙ্গে জলযান মেরামতির কাজের জন্য ড্রাই ডক নির্মাণের উপরে জোর দিয়েছেন ফিরহাদ। পেট্রল-ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তেলের যা আকাশছোঁয়া দাম, তাতে পরিবহণমন্ত্রী হিসেবে আমি আতঙ্কিত। কী ভাবে পরিবহণ চলবে, তা নিয়ে চিন্তিতও। কেন্দ্র যে ভাবে দাম বাড়িয়ে চলেছে, তাতে পণ্যবাহী গাড়িগুলি খুব সমস্যায় পড়ছে।’’