ফাইল চিত্র।
আক্ষরিক অর্থেই সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। তাই মেট্রোকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে দৈনিক হাজিরা নিয়ে। কলকাতার মেট্রো ভবনে কর্মী ও আধিকারিকদের মধ্যে ৫০ শতাংশ হাজিরার নিয়ম চালু থাকলেও সরাসরি দৈনিক পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের প্রতিদিন কাজে আসতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনের কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। রবীন্দ্র সদন এবং নেতাজি ভবন স্টেশনের বেশ কয়েক জন কর্মী সংক্রমিত বলে খবর। হাল্কা সর্দি-জ্বরের মতো উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও অনেককেই নিয়মিত কাজে আসতে হচ্ছে বলে আইএনটিটিইউসি-অনুমোদিত মেট্রোর কর্মী ইউনিয়নের অভিযোগ। সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পরিষেবা সচল রাখতে গিয়ে দূর-দূরান্তের কর্মীদের যে ভাবে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে বা বাসে চেপে, সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে, তাতে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, পার্ক স্ট্রিটের সদর দফতর মেট্রো ভবনে ৫০ শতাংশ হাজিরার নিয়ম মানা গেলেও যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী না থাকায় ট্র্যাফিক বা পরিষেবা বিভাগের কর্মীদের নিয়মিত কাজে যেতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে নতুন নিয়োগ না হওয়া সত্ত্বেও উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর পরিষেবা সম্প্রসারিত হয়েছে। দু’টি নতুন স্টেশন বরাহনগর এবং দক্ষিণেশ্বর যুক্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সাতটি স্টেশনেও পরিষেবা চালু রয়েছে। ওই সমস্ত স্টেশনের জন্যও প্রয়োজনীয় কর্মী এবং ট্রেনচালক বরাদ্দ করা হয়েছে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো থেকেই। ফলে, প্রায় প্রতিটি স্টেশনেই কর্মী-সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এর মধ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, দু’টি শিফটে পরিষেবা সচল রাখতে গেলে কর্মীদের ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন স্টেশন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের একাংশ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মেট্রোর কর্মী ইউনিয়ন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ধাঁচে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা বা সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু রাখার দাবি তুলেছে। তাদের মতে, পরিষেবার সময় কিছুটা কমলে মেট্রোকর্মীদের দৈনিক যাতায়াতের ক্ষেত্রে খানিকটা সুবিধা হয়। তবে আধিকারিকদের একাংশের মতে, শহরের গণপরিবহণের একটি বড় স্তম্ভ হল মেট্রো। এই অবস্থায় ট্রেনের সংখ্যা বা পরিষেবার সময় কমালে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে পারে। তা ছাড়া, রাতের দিকে বাসের পরিষেবা পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় মেট্রো তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে গেলে যাত্রীদের বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে। সেই কারণে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে জেনেও পরিষেবা চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন মেট্রোর আধিকারিক ও কর্তাদের একাংশ।