প্রার্থনা: আন্দোলন মঞ্চেই ইদের নমাজ। পাশে রয়েছেন বাকি এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরাও। রবিবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র।
মেঘের ফাঁক দিয়ে কখনও উঁকি দিয়েছে সূর্য। ফের ডুবেছে মেঘের আড়ালে। সারাদিন ধরে এ ভাবেই চলেছে মেঘ-বৃষ্টির খেলা। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ত্রিপলের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। তবুও উৎসবের আনন্দে ভাটা পড়েনি। রবিবার দুপুরে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ইদের নমাজও পড়লেন এসএসসি পাশ নবম থেকে দ্বাদশের মেধা তালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীরা।
গান্ধী মূর্তির কাছে নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ মঞ্চ রবিবার ২৬৭ দিনে পা দিল। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের তৃতীয় দফা চলছে। প্রথমে প্রেস ক্লাবের সামনে, তার পরে সল্টলেক করুণাময়ীতে এবং এ বছর গান্ধী মূর্তির পাদদেশ। এই তিন দফা মিলিয়ে আন্দোলন মোট ৪৮৩ দিনে পা দিল।
প্রার্থীদের বিক্ষোভ মঞ্চে ইদ ঘিরে এ দিন ছিল সম্প্রীতির পরিবেশ। দুপুরে নমাজ পড়ার পরে একে অপরকে কোলাকুলি করে মিষ্টি খাওয়াতে দেখা গেল। এক চাকরিপ্রার্থী অবশ্য বললেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে মিষ্টি বা বিশেষ খাবার ছিল না। এ দিন বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট মানুষ উৎসব উপলক্ষে মঞ্চে দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁরা সঙ্গে মিষ্টি নিয়ে এসেছিলেন। সেটাই আমরা একে অপরকে খাইয়েছি।’’ অন্য এক চাকরিপ্রার্থী ইলিয়াস বিশ্বাসের কথায়, ‘‘সারা বছর যেখানে কাটছে, সেই গান্ধী মূর্তির কাছেই বিক্ষোভ মঞ্চে ইদ পালন করলাম। ছিলেন সব ধর্মের বন্ধুরাই। বাড়ি ছেড়ে থাকার বিষণ্ণতা কাটিয়ে দিয়েছিলেন ওঁরাই।’’
ইদের নমাজের শেষে ফের দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়। তখন আন্দোলনকারীদের খুঁজে নিতে দেখা গেল ত্রিপলের আশ্রয়। তাঁদের কথায়, বর্ষাকালে আন্দোলন চালানো সত্যিই কঠিন। পাশাপাশি এ-ও জানিয়ে দিলেন, তাঁদের দ্রুত নিয়োগের দাবি পূরণ না হলে কোনও ভাবেই গান্ধী মূর্তির পাদদেশ ছেড়ে সরবেন না। চাকরিপ্রার্থীদের মতে, শিক্ষা দফতর যে শূন্য পদের কথা কিছু দিন আগে ঘোষণা করেছে, সেখানে বলা হয়েছে, নবম ও দশম শ্রেণির জন্য ১৯৩২টি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ২৪৭টি শূন্য পদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু মেধা তালিকায় প্রার্থী সংখ্যা আরও অনেক বেশি। তাঁদের দাবি, শুধু ওই ঘোষিত শূন্য পদে নয়, মেধা তালিকার সবাইকে চাকরি দিতে হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন ছেড়ে যাবেন না জানিয়ে এ দিন তাঁদের মনোভাব ফের স্পষ্ট করলেন।