—প্রতীকী ছবি।
নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে একের পর এক দুর্ঘটনার পরে বেপরোয়া গাড়ির গতি ঠেকাতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। ‘অবাধ্য’ চালকদের বাগে আনতে ওই রাস্তায় গতি মাপার ক্যামেরা বসানোর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাতে অতিরিক্ত গতি কিংবা ট্র্যাফিকআইন লঙ্ঘন করলে অভিযুক্ত চালককে স্বয়ংক্রিয় ভাবে জরিমানা করা যায়।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশ এলাকায় বহু গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এই ধরনের ক্যামেরা বসানো রয়েছে। ই এম বাইপাসের মতো রাস্তাতেও বসেছে এমন ক্যামেরা। ওই সব রাস্তায় চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে কিংবা অন্য কোনও ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে সেই ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং চালকের কাছে জরিমানার বার্তা পৌঁছে যায়।
কলকাতার পাশেই বিধাননগর। সেটিও কমিশনারেট এলাকা। অথচ, এখনও পর্যন্ত সেখানে গতিমাপার ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা হয়নি। পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের দাবি, এই ধরনের ক্যামেরা অত্যন্ত দামি। সেকারণে তা বসানো সম্ভব হচ্ছে না। এ বার বিশ্ব বাংলা সরণিতে ওই ধরনের ক্যামেরা বসাতে উদ্যোগী হয়েছে নিউ টাউন কলকাতাডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। তাদের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়িতকরার চেষ্টা করছে বিধাননগর কমিশনারেট।
এনকেডিএ সূত্রের খবর, বিশ্ব বাংলা গেট থেকে অ্যাকশন এরিয়া-৩ এর মধ্যে কয়েকটিক্যামেরা পরীক্ষামূলক ভাবে বসানো হয়েছে। যদিও ঠিক কবে থেকে এই ব্যবস্থা চালু হবে, তা নিয়ে পুলিশ কিংবা এনকেডিএ নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানাতে পারেনি। এনকেডিএ-র এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওইক্যামেরা কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারছে, প্রথমে তা দেখা হবে। তার পরে পুরোদস্তুর চালু করার কথা ভাবা হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে রাতে এবং ভোরে বেপরোয়া গতিতে গাড়িচলাচল করে। অভিযোগ, কমবয়সিরা গাড়ি কিংবা বাইক নিয়ে ‘রেস’ও করে থাকেন। সম্প্রতি ওই রাস্তায় তিনটি গাড়ি নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করার সময়ে একটির ধাক্কায় এক বাইকচালক-সহ তিন জনগুরুতর জখম হন। এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বেপরোয়া গতির বলিহয়েছিলেন এক ছাত্র। গত বছরই পেঁচার মোড়ে শুটিং চলার সময়ে একটি বেপরোয়া গাড়ি সেখানে ঢুকে দুর্ঘটনা ঘটায়। এর পাশাপাশি, একাধিক বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে শুধুমাত্র বেপরোয়া গতির কারণে।
যদিও প্রশ্ন উঠছে, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকার অন্য রাস্তাতেও একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।কিছু মাস আগে দমদম পার্কের কাছে বেপরোয়া গতির গাড়ির ধাক্কায় দুই বাইকচালক-সহ চার জনের মৃত্যু হয়। রাতের ভিআইপি রোডে বাসে বাসে রেষারেষি কার্যত রোজকার ঘটনা। সল্টলেকের অনেক রাস্তাতেও বেপরোয়া ভাবে গাড়িচলাচল করে। অথচ এই রাস্তাগুলিতে ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা হয়নি। চালকদের একাংশের বিরুদ্ধে এ-ও অভিযোগ, তাঁরা কলকাতার রাস্তায় সতর্ক হয়ে গাড়ি চালালেওবিধাননগর কিংবা নিউ টাউনের রাস্তায় গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘গাড়ির গতি মাপার ক্যামেরা অত্যন্ত দামি। তাই এখানে তা বসানোসম্ভব হয়নি। নিউ টাউনে সেই চেষ্টা চলছে। দেখা যাক কী হয়।’’