প্রতীকী ছবি।
হাওড়ায় কোভিড সংক্রমণ কমলেও রোখা যাচ্ছে না মৃত্যুর হার। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি জেলার সমস্ত সরকারি হাসপাতালের সুপার, মেডিক্যাল অফিসার এবং চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করে অবিলম্বে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তারা। একই সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় নতুন করে চালু হয়েছে বালিটিকুরি ইএসআই কোভিড হাসপাতাল। বাড়ানো হয়েছে চিকিৎসক ও শয্যার সংখ্যাও।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ দিনে হাওড়ায় কোভিডে মৃত্যু হয়েছে মোট ২৩ জনের। গত ২০ জানুয়ারি (২১ জানুয়ারি প্রকাশিত) যখন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪৪-এ নেমে এসেছে, তখন মৃত্যু হয়েছিল ১১ জনের। তার পরের দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৪১ জন, মৃত্যু হয়েছিল ৭ জনের। এর পরে ২৯ জানুয়ারি (৩০ জানুয়ারি প্রকাশিত) ৪৬৬ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই দিন ৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অন্য জেলার তুলনায় কোভিডে হাওড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা না-কমায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর যে উদ্বিগ্ন, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল।
তিনি জানান, গত কয়েক দিন ধরে কোভিডে মৃত্যুর তালিকা বাড়তে থাকায় তিনি সম্প্রতি জেলার সব হাসপাতালের সুপার, মেডিক্যাল অফিসার, চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক করেন। প্রতিটি মৃত্যুর কারণ বিস্তারিত ভাবে খতিয়ে দেখেন। প্রতিটি মৃত্যুর কারণের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন।
পরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘এই সময়ে হাসপাতালে যে রোগীরা মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে বা অন্য কারণে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। অধিকাংশেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। এর পরে তাঁদের মৃত্যু হলে মূল অসুখ চাপা পড়ে কোভিড তালিকায় ঢুকে যাচ্ছে। যে কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হচ্ছে।’’
এই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পিছনেও অন্য কারণ দেখছেন জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। তাঁরা মনে করছেন, অন্য রোগের জন্য
বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা করাতে গিয়েই ওই রোগীরা সংক্রমিত হচ্ছেন।
নিতাইবাবু বলেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক না কেন, জেলার সমস্ত হাসপাতালের সুপার ও চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে হবে। অন্য রোগ নিয়ে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু যাতে না হয়, তার জন্য সতর্ক হয়ে চিকিৎসা করতে বলা হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কো-মর্বিডিটি রয়েছে এমন রোগীদের ভর্তি করে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য নতুন করে
বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে কোভিডের চিকিৎসা চালু করা হয়েছে। সেখানে ২০টি সিসিইউ ও ৫০টি নন-সিসিইউ শয্যার ব্যবস্থা
করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো শয্যার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।