কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কর্মীদের দিনের কাজ শেষ হলে অস্ত্র জমা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
সাম্প্রতিক কালে ডাকাতি এবং তোলাবাজির একাধিক ঘটনায় পর পর গ্রেফতার হয়েছে কলকাতা পুলিশের একাধিক কর্মী। তাদের মধ্যে চার জনই স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের। তাই এ বার কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কর্মীদের দিনের কাজ শেষ হলে অস্ত্র জমা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশকর্মীরা যাতে দিনের কাজের পরে সার্ভিস রিভলভার নিয়ে কোনও রকম দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারেন, সে জন্যই এই নির্দেশ। তাতে বলা হয়েছে, প্রতিদিন কাজের শেষে অফিসের অস্ত্রাগারে অস্ত্র জমা দিতে হবে পুলিশকর্মীদের। তা সম্ভব না হলে নিকটবর্তী যে কোনও থানায় তাঁদের সার্ভিস রিভলভারটি জমা রাখতে হবে। কোনও ভাবেই কাজের পরে নিজের কাছে অস্ত্র রাখতে পারবেন না পুলিশকর্মীরা।
কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সঙ্গে যুক্ত এক কর্তা বলেন, ‘‘এটা নতুন কোনও নির্দেশ নয়। আগেই পুলিশ কমিশনার এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাম্প্রতিক কালে কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তা ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের সকলকে নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে।’’ গত এক মাস ধরে এই নির্দেশ কঠোর ভাবে মানা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
কিন্তু এমন নির্দেশ কেন? লালবাজার জানিয়েছে, নিয়মানুযায়ী কাজে যোগদানের আগে সমস্ত পুলিশকর্মীর নামে সার্ভিস অস্ত্র এবং কার্তুজ দেওয়া হয়ে থাকে। যা কাজের শেষে তাঁদের অস্ত্রাগারে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অস্ত্র জমা দিচ্ছেন না অনেকে। এমনকি, অভিযুক্তেরা অপরাধ করার সময়ে সেই সার্ভিস রিভলভারই ব্যবহার করেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তাই সার্ভিস রিভলভারের বেআইনি ব্যবহার ঠেকাতেই এই নির্দেশ ফের জারি করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত কয়েক মাসে লালবাজারের একাধিক পুলিশকর্মীকে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাঁরা অস্ত্র দেখিয়ে তোলাবাজি বা অপহরণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। এক পুলিশকর্তা জানান, একাধিক অপরাধের ঘটনার সঙ্গে পুলিশকর্মীদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ অভিযুক্তই কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যালব্রাঞ্চের সঙ্গে যুক্ত এবং তাঁরা সাদা পোশাকে থেকে সহজে অপরাধীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে অপরাধ ঘটাতে পারছেন। তাই এমন প্রবণতা ঠেকাতে প্রথমেই অস্ত্রের ব্যবহারের উপরে কড়াকড়ি করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতিভবানীপুরের একটি ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে। ওই পুলিশকর্মী স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চে কর্মরত।