বিপদ: দক্ষিণ দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন একাধিক ডেঙ্গি আক্রান্ত। সেখানেই বাচ্চাদের খেলার পার্কে জমা জলে মিলল মশার লার্ভা। মঙ্গলবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যুর পরেও কারও হুঁশ ফিরছে না দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায়। এক দিকে যেমন স্থানীয় স্তরে পুর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, অন্য দিকে,বাসিন্দাদের যে সচেতনতা এখনও গড়ে ওঠেনি, সেই ছবিও বার বার সামনে আসছে। আর এরই মাঝে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কখনও বাড়ছে, কখনও কমছে। পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত শতাধিক বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৪২ জন।
দমদম এবং উত্তর দমদম পুরসভা এলাকায় অবশ্য ছবিটা একটু আলাদা। সেখানে এখনও ডেঙ্গির প্রকোপ সে ভাবে বাড়েনি বলেই পুরকর্তাদের দাবি। ওই দুই পুর এলাকার প্রতিটি
ওয়ার্ডে জোরকদমে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্ট এবং উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস
জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সে ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা না গেলেও বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে প্রতিটি ওয়ার্ডেই। জল জমতে না দেওয়া, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষও অবশ্য একই রকম দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, মশা এবং মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে জোরকদমে কাজ চলছে। জল জমতে না দেওয়া ও পরিচ্ছন্নতার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।
যদিও ওই পুরসভার একাধিক এলাকার ছবি অন্য কথাই বলছে। যেমন, দক্ষিণ দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, একটি স্কুল সংলগ্ন জমিতে শিশুদের জন্য একাধিক খেলার সরঞ্জাম রাখা। যদিও শিশুদের সেখানে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ, জায়গাটা ঝোপজঙ্গলে ভরে আছে। সঙ্গে বাঁশ, ইটের স্তূপ। শিশুদের খেলার সামগ্রীতে জমেছে বৃষ্টির জল। ওই এলাকায় ঝিল ও ঝিলের পাড়ে আবর্জনা ফেলা নিষিদ্ধ করেছে পুরসভা। সেই নিষেধাজ্ঞা সংবলিত ফ্লেক্স লাগানো থাকলেও দেখা গেল, সেখানেই আবর্জনার স্তূপ। তাতে ঝিল অবরুদ্ধ। তার মধ্যে জলে ভাসছে থার্মোকল। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুরকর্মীরা ঠিক মতো সাফাইকাজ করছেন না। নর্দমা অবরুদ্ধ হয়ে থাকছে। ঝোপজঙ্গলে ভরে আছে জায়গাটি।
অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি প্রফুল্লরঞ্জন সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘পুরকর্মীরা যথাসাধ্য কাজ করছেন।’’ বাসিন্দাদের একাংশের সচেতনতা নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘পুরকর্মীরা উপযুক্ত সহযোগিতা পাচ্ছেন না।’’ তাই প্রশাসনের সঙ্গে সকলকে সহযোগিতা করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস অবশ্য অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাজ চলছে। নিশ্চিত ভাবে কোথাও কাজ নিয়ে অভিযোগ
থাকলে খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’