প্রতীকী চিত্র।
সল্টলেকের একটি অতিথিশালা থেকে সোমবার সকালে ধর্মীয় কারণে কয়েক জন মাদ্রাসা শিক্ষককে বার করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ’। তাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও বিধাননগর পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই অতিথিশালার পাঁচ জন কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। অতিথিশালার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলামের অভিযোগ, মালদহ থেকে ১০ জন শিক্ষক পেশাগত কারণে এ দিন বিকাশ ভবনে এসেছিলেন। তাঁরা ওই সংগঠনের সদস্য। তাই তিনি ডিএল ব্লকের একটি অতিথিশালায় ঘর বুক করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, অতিথিশালায় ওঠার দু’ঘণ্টা পরেই ওই শিক্ষকদের সিএল ব্লকের অন্য একটি অতিথিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রেখে বলা হয়, ঘর দেওয়া যাবে না। সে কথা শুনে মইদুল অতিথিশালায় কথা বলেন। অভিযোগ, ম্যানেজার তাঁকে ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে বলেন, ‘‘স্থানীয় লোকজন আপত্তি করছেন। আপনারা চলে যান।’’ বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হন শিক্ষকেরা। মইদুল বলেন, ‘‘রাজ্যের সম্প্রীতির স্বার্থে অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।’’
মইদুলের আরও দাবি, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা অভিযোগ পেয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, তাদের কাছে অভিযোগ এলে বিষয়টি সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরকে জানানো হয়। কারণ রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি ওই দফতরের অধীন।
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই শিক্ষকেরা কেঁদে ফেলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘এ রাজ্যে ধর্মীয় কারণে অতিথিশালা থেকে বার করে দেওয়া হবে, ভাবতেও পারছি না।’’ বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী অবশ্য জানান, স্থানীয় কেউ আপত্তি করেছেন বলে তাঁর জানা নেই। অভিযোগ খারিজ করে ডিএল ব্লকের অতিথিশালার মালিক অমিত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব ঘরেই লোক রয়েছে। তাই বুকিং নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। এখানে শিক্ষকেরা আসেননি।’’
সিএল ব্লকের অতিথিশালার এক কর্মীর দাবি, শিক্ষকেরা সকালে গেলে বলা হয়েছিল, ১০টার আগে ঘর ছেড়ে দিতে হবে। কারণ, অন্য বুকিং আছে। অপমান করা বা অন্য কিছু বলা হয়নি।
ডিএল ব্লকের অতিথিশালার কর্মী টুবাই শর্মার দাবি, তিনি বিভিন্ন অতিথিশালার বুকিং করিয়ে কমিশন পান। রবিবার রাতে মইদুলকে তিনি জানিয়েছিলেন, ডিএল ব্লকে ঘর নেই। সিএল ব্লকে হয়ে যাবে। সেই মতো তিনি সেখানে ঘর বুক করেন। এ দিন সকালে শিক্ষকদের সেখানে পৌঁছে দেন তিনি। তার পরে কী হয়েছে, জানেন না।
এই ঘটনা সম্পর্কে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘বিধান রায়ের নামাঙ্কিত জায়গায় ধর্মীয় কারণে শিক্ষকদের বার করে দেওয়া হল, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।