প্রতীকী ছবি
ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত বিধাননগরে উপড়ে পড়েছিল একের পর এক বাতিস্তম্ভ। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছিল বহু জায়গায়। যার জেরে অন্ধকারে ডুবে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। বিদ্যুৎ না-থাকায় পাম্প চলেনি। ফলে জল সরবরাহ নিয়েও দেখা দেয় সমস্যা। সল্টলেকেও জল যাচ্ছিল না বহু এলাকায়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও এখনও জলের সমস্যা রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। বিশেষত এক নম্বর সেক্টরের ৩৯, ৪০ এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক ব্লকে সমস্যা বেশি বলে অভিযোগ। তবে দুই ও তিন নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন ব্লক থেকেও জল না পাওয়ার অভিযোগ এসেছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেও লাভ হয়নি। বিধাননগর পুরসভা অবশ্য জানিয়েছে, দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড়ের পরের দিন থেকেই জলের সঙ্কট শুরু হয়েছে। জল কখনও খুব অল্প অল্প আসছে, কখনও আসছেই না। লকডাউনে প্রায় সকলেই এখন বাড়িতে। তাই জলের চাহিদাও বেড়েছে।
বিধাননগরে দৈনিক গড়ে এক কোটি গ্যালন জল প্রয়োজন হয়। কলকাতা পুরসভা থেকে মেলে ৭০-৮০ লক্ষ গ্যালন জল। কিন্তু ঝড়ের পরে গত কয়েক দিন ধরে কমবেশি ৪০ লক্ষ গ্যালন জল আসছে। জোগানে এই ঘাটতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ না-থাকায় পাম্প চালাতে না-পারার সমস্যা। তবে সোমবার থেকে টালা-পলতার জলের জোগান বেড়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জল সরবরাহ।
এক নম্বর সেক্টরের এএ ব্লক থেকে শুরু করে ৪১, ৪০ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক ব্লকে এ দিন সকালেও জলের সমস্যা ছিল। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জলের খুব সমস্যা চলছে। আশা করছি, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। ঝড়ের অনেক আগেই দুই, তিন ও চার নম্বর ট্যাঙ্কের অবস্থার কথা পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। মেয়র পারিষদ ও আধিকারিকেরা পরিদর্শনও করেছেন। ওই ট্যাঙ্কগুলির দ্রুত মেরামতি প্রয়োজন।’’
জল সরবরাহ দফতরের কর্তার অবশ্য দাবি, কাজ হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এ দিনই দু’নম্বর ট্যাঙ্ক ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে সাবমার্সিবল পাম্প মেরামতির কাজ চলেছে বলে পুরসভা সূত্রের দাবি। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমারের দাবি, দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায়ের বক্তব্য, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও জলের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর দাবি, এ বার থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে জল সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা হোক।
মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানা জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে কয়েক দিন কলকাতা পুরসভা কম জল পাঠাচ্ছে। তবে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
জল সরবরাহ দফতরের মেয়র পারিষদ বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের দাবি, পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তা-ও কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, জলের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। পাশাপাশি, পরিকাঠামো বৃদ্ধি, জলের অপচয় এবং জল চুরির ঘটনা রোধে বাড়তি জোর দেওয়া হবে।