ছবি: ভাস্কর দাস
ওঁরা সকলেই শল্য চিকিৎসক। স্টেথোস্কোপের বেশি ওঁদের কাছে বেশি থাকে হ্যামার-সহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। ওঁরা রোগীদের ছবি করতে বললে সবাই বোঝে এক্স-রে করাতে হবে। ওঁরা ছবি দেখতে চাইলে সবাই এক্স-রে কিংবা এমআরআই, সিটি স্ক্যানের প্লেট দেখান। কিন্তু এবার ওঁরা অন্য ছবির জন্য খবরে। ছয় শল্য চিকিৎসক একযোগে দল বেঁধেছেন অনাথ শিশুদের ভাল চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ করে দিতে। সবাই মিলে মনের সুখে ছবি তুলে বেড়িয়েছেন। এ বার অনাথের সেবা করতে চাওয়া মনের টানে সেই সব ছবি দিয়ে প্রদর্শনী করতে চান। যে প্রদর্শনী থেকে উঠে আসা টাকা খরচ করা হবে অনাথ শিশুদের মঙ্গলের জন্য।
তবে এঁরা যে নবিশ চিত্রগ্রাহক তা নয়। সকলেই ভাঙা হাড় জোড়ার পাশাপাশি ফ্রেমের সঙ্গে ফ্রেম মিলিয়ে দিতে জানেন। এই যেমন চিকিৎসক গৌতম বসু। কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের কনসালট্যান্ট হিসেবে যুক্ত গৌতমের ছবির সঙ্গে যোগাযোগও দীর্ঘদিনের। রয়্যাল ফোটোগ্রাফিক সোসাইটির সাম্মানিক সদস্য ছবি তোলায় সবচেয়ে বেশি আগ্রহ প্রকৃতি। ল্যান্ডস্কেপ ও ট্র্যাভেল ফটোগ্রাফি মূল বিষয়। অতীতে একক প্রদর্শনী হয়েছে অনেক। এ বার অনেকের সঙ্গে।
ছয় চিকিৎসকের দলের নাম ‘অর্থোপডস’।
গৌতমের সঙ্গে রয়েছেন চিকিৎসক ভাস্কর দাস। চিকিৎসা নিয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ইন্সটিটিউট অব ফোটোগ্রাফি থেকে স্নাতক। বেশি আগ্রহের বিষয় মানুষ, পরিবেশ, সংস্কৃতি, উৎসব। ছবি ও লেখায় সাজিয়েছেন তিনটি বই। চিকিৎসক ইন্দ্রজিৎ সর্দার আগে এসএসকেএম হাসপাতালের অস্থিশল্য চিকিৎসা বিভাগে যুক্ত থাকলেও এখন বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন। সঙ্গীত থেকে ধারাবিবরণী নানা গুণের অধিকারী ইন্দ্রজিৎ ছবি তোলাতেও পারদর্শী। এই দলে রয়েছেন আরও তিন চিকিৎসক কৌশিক ঘোষ, অভিজিৎ সর্বাধিকারী এবং দীপেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলেই নিজের পেশার সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা চালাতেও সমান পারদর্শী।
এই দলের পক্ষে ভাস্কর দাস বলেন, ‘‘আমরা নিজের কত জনের আর উপকার করতে পারব। তাই ঠিক করেছি ছবি বিক্রির টাকার একটা অংশ ওয়েস্ট বেঙ্গল অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া হবে। ওই সংস্থাই গরীব রোগীদের স্প্লিন্ট-সহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে দেবে। এ ছাড়াও প্রাপ্য অর্থের একটা অংশ এমন বিভিন্ন সমাজসেবামূলক সংগঠনকে দেওয়া হবে যারা অনাথ শিশুদের প্রতিপালনের কাজ করে।’’ প্রদর্শনী হবে ২২ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি বিড়লা অ্যাকাডেমিতে।