স্কাইওয়াকের কাজ চলছে কালীঘাটে। ছবি : রণজিৎ নন্দী
মাটির অনেকটা নীচে পর্যন্ত গভীর খনন করে পাইলিং করার জন্য থাকার কথা দু’টি মেশিন। কিন্তু কাজ করছে মাত্র একটি। অন্য মেশিনটি গত এক মাস ধরে বিকল। এ ছাড়া, মাটি খুঁড়তে গিয়ে ফাটছে জড়াজড়ি করে থাকা ব্রিটিশ আমলের জলের আর নিকাশির পাইপ। কালীঘাট স্কাইওয়াকের নির্মাণকাজে দেরি হওয়ার পিছনে উঠে আসছে এমনই একাধিক কারণ।
স্কাইওয়াক নির্মাণের গতি নিয়ে ক্ষোভ গোপন করেননি মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছেন, যা পাইলিং প্রয়োজন, তার ২০ শতাংশ কাজও হয়নি। এর পরেই গত বুধবার দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘কাজ খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে। কেন দেরি হচ্ছে, লিখিত ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’
ঠিকাদার সংস্থার তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে, এই ধরনের বড় প্রকল্পে মাটি খুঁড়ে পাইলিংয়ের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গত এক মাস ধরে একটি মেশিন বিকল। আগে আর একটি মেশিন আনা হলেও সেটি পাঁচ বছরের বেশি পুরনো হওয়ায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বাতিল হয়েছে। কাজ চালাতে হচ্ছে মাত্র একটি মেশিন দিয়ে। সংস্থার দাবি, দিন দশেকের মধ্যেই আমদাবাদ থেকে নতুন মেশিন আসবে। তখন কাজের গতি বাড়বে।
মেশিনের অভাবের পাশাপাশি নির্মাণকাজে দেরির পিছনে রয়েছে পাইপ ফাটার ভোগান্তি। কাজ চলাকালীন বৃহস্পতিবার বিকেলে কালী টেম্পল রোডে ভূগর্ভে থাকা জলের পাইপ ফেটে যায়। ফলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পরিস্রুত পানীয় জল পাননি। স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জল সরবরাহের জন্য পুরসভার তরফে চারটি জলের গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে মেরামতি হয়ে যাবে।’’
স্কাইওয়াকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘কাজে দেরি হওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, ওই এলাকাটি ঘিঞ্জি। দ্বিতীয়ত, মাটির নীচে মান্ধাতার আমলের নিকাশি ও জলের পাইপ থাকায় সাবধানে খোঁড়াখুড়ির কাজ করতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার যেখানে জলের পাইপ ফেটেছে, সেখানে পুরসভার তরফে আগে জানানো হয়েছিল, ওই জায়গায় জলের পাইপ নেই। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র। কাজের মধ্যেই অনেক সময়ে মাটি খোঁড়ার পথ পরিবর্তন করতে হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দক্ষিণেশ্বরের আদলে গত বছর কালীঘাট স্কাইওয়াকের কাজ শুরু করে কলকাতা পুরসভা। নিয়মমতো আগামী বছরের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে বিশ্বজিৎবাবু এ দিন জানান, কাজ শেষ হতে অতিরিক্ত আরও তিন মাস সময় লাগবে।