প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের তরুণ আইনজীবী স্বস্তিক সমাদ্দারের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া চূড়ান্ত রিপোর্টও দিতে পারবে না পুলিশ। মামলার পরবর্তী শুনানি স্থির হয়েছে ২ এপ্রিল।
বর্ধমানের ডিভিসি মোড়ের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা স্বস্তিক ২১ জানুয়ারি বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন। আর ফেরেননি। ২২ জানুয়ারি বর্ধমান থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গেলে ফর্ম শেষ হয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে ডায়েরি না নিয়ে পুলিশ ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ২৩ জানুয়ারি নিখোঁজ ডায়েরি করেন স্বস্তিকের পরিবার। ২৯ জানুয়ারি পুলিশ তাঁর দেহ উদ্ধার করে। ওই আইনজীবীর এক বন্ধুকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের তদন্তে গাফিলতি রয়েছে।
মৃতের পরিবারের আইনজীবী কল্লোল বসু আদালতে দাবি করেন, মৃতের মুখে, হাতে অ্যাসিড দিয়ে পোড়ানোর চিহ্ন ছিল। মুখে কোনও পশুর নখের আঁচড়েরও দাগ ছিল। কিন্তু পশু বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত পশু প্রথমেই মুখে আক্রমণ করে না। অথচ মৃতের শরীরে কোনও ক্ষতের চিহ্ন নেই। এমনকি যে বাইকটি উদ্ধার হয়েছে তাতেও কোনও দুর্ঘটনার চিহ্ন নেই। ফলে কী করে তাঁর মৃত্যু হল, এখনও নিশ্চিত করতে পারছে না পুলিশ।
বিচারপতি সেনগুপ্ত এর পরেই রাজ্যের কাছে জানতে চান, এমন একটা ক্ষতবিক্ষত দেহের ময়না-তদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং কেন করা হয়নি? বাইকের থেকে আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে কি না? রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, মৃত যুবক নেশা করতেন। একটি নিরিবিলি জায়গা থেকে তাঁর বাইক পাওয়া গিয়েছে। তাঁর এক বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। সম্ভবত বাইকে বসে থাকা অবস্থায় ওই আইনজীবীকে কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে।
রাজ্যের এই বক্তব্যে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে বিচারপতি কেস ডায়েরি দেখতে চান। তারপরে জানান, এটা অভিযুক্তের বক্তব্য। পুলিশ সেটাকেই কী করে সত্যি বলে ধরে নিচ্ছে? ভিসেরা রিপোর্ট কোথায়? মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ির কোনও পরীক্ষা হয়েছে? মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন রিপোর্ট কোথায়? ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হয়েছে কি না, জানতে চান তিনি। তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে চেয়ে পুলিশের থেকে অগ্রগতি রিপোর্টও তলব করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এর সঙ্গেই আদালতের অনুমতি ছাড়া পুলিশ এই ঘটনায় কোনও চূড়ান্ত রিপোর্ট দিতে পারবে না বলেও নির্দেশ দেন তিনি।