অবরুদ্ধ: নবান্ন অভিযানের মাঝপথে রাস্তাতেই বসে পড়লেন আশাকর্মীরা। শুক্রবার, ধর্মতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
বৃহস্পতিবারের পরে শুক্রবার। মিছিলে এবং অবরোধে ফের আরও একটি কাজের দিনে যান চলাচল আটকে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়লেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ যানবাহন বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরিয়ে দিলেও ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পেল না শহর। ধর্মতলার মতো ব্যস্ত এলাকা প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকার ফলে জেরবার হতে হয় নাগরিকদের। এ দিন ধর্মতলায় গিয়ে দেখা যায়, বাস থেকে নেমে হেঁটেই অনেকে হাওড়া এবং ডালহৌসির দিকে যাচ্ছেন। যদিও লালবাজারের দাবি, অবরোধ উঠে যেতেই যান চলাচল স্বাভাবিক করে অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন ‘পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়ন’ এবং ‘পশ্চিমবঙ্গ পৌর স্বাস্থ্যকর্মী (ঠিকা চুক্তি) ইউনিয়ন’-এর নবান্ন অভিযান ছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে তাদের মিছিল শুরু হয়। এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে এসে ওই মিছিল রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে না গিয়ে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং অবরোধ করে। যা চলে প্রায় সওয়া এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। আর তাতেই স্তব্ধ হয়ে যায় জওহরলাল নেহরু রোড এবং এস এন ব্যানার্জি রোডের যান চলাচল। সেই যানজটের প্রভাবে থমকে যায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, রানি রাসমণি রোড, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট-সহ মধ্য কলকাতার একাধিক রাস্তার যান চলাচল। পুলিশ জানায়, ধর্মতলা অবরুদ্ধ থাকাকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে মৌলালি থেকে মল্লিকবাজারের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় ট্র্যাফিক পুলিশ। একই ভাবে মেয়ো রোড দিয়ে পাঠানো হয় জওহরলাল নেহরু রোডের ধর্মতলামুখী যানবাহনকে। আবার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে আসা ধর্মতলামুখী গাড়িগুলিকে পাঠানো হয় বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট এবং গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ দিয়ে। অন্য দিকে, রাজভবনের কাছে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান। এ দিন দুপুরের পরে শহরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে সেখানে যায় কর্মী-সমর্থকদের একাধিক মিছিল। তাতেই ডালহৌসি অঞ্চলের রাস্তায় গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক ছন্দ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, ধর্মতলা অবরুদ্ধ থাকার সময়ে রাহুল গান্ধীর প্রতি বিজেপির ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের প্রতিবাদে মৌলালি মোড় অবরোধ করে কংগ্রেস। প্রায় দশ মিনিট সেই অবরোধ চলে। আর তাতেই যান চলাচলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ওই অবরোধ চলাকালীন এপিসি রোডের মৌলালিমুখী গাড়ি মহাত্মা গান্ধী রোড দিয়ে পাঠানো হয়েছিল।
পুলিশ নানা ভাবে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও ভোগান্তি কিন্তু তেমন কমেনি বলে অভিযোগ। ফলে রীতিমতো গলদঘর্ম অবস্থা হয়েছে অসংখ্য মানুষের। তাঁদের একটাই প্রশ্ন, রাস্তা আটকে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা বন্ধ হবে কবে?