—প্রতীকী চিত্র।
তুলনায় কম হলেও বাজির দাপট ছিল। এটা যদি হয় শব্দ-দৌরাত্ম্যের এক পিঠ, তবে উল্টো পিঠে রয়েছে বছরের বিভিন্ন সময়ে, বিশেষত শীতকালে মাইকের অত্যাচার। অন্তত এমনটাই অভিযোগ দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারের বাসিন্দাদের। তাঁদের প্রশ্ন, বাজির উপদ্রব তো নির্দিষ্ট কিছু সময়ে সীমাবদ্ধ। কিন্তু
বছরভর নানা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উচ্চগ্রামে যে মাইক বাজতে থাকে, তার হাত থেকে মুক্তি মিলবে কবে? সেই সদিচ্ছা কি আদৌ স্থানীয় প্রশাসন বা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের থাকে? সমস্যার কথা মানছেন পুরকর্তা থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের একাংশও। যদিও তাঁদের দাবি, আগের চেয়ে মাইক বাজানোর প্রবণতা কমেছে। যে জায়গায় অনুষ্ঠান, মূলত সেখানেই শব্দ সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এক বাসিন্দা সার্থক মজুমদার বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচি তো আছেই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে মেলা, খেলা থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান। এ সবের জন্য অনেকটা জায়গা জুড়ে মাইক লাগানো হয়।’’ আর এক প্রবীণ নাগরিকের কথায়, ‘‘এ বার বাজির দাপট তুলনামূলক ভাবে কম থাকলেও মাঝরাতে বাজি ফেটেছে। তবে বছরের নানা সময়ে মাইকের শব্দে ভীষণ অসুবিধা হয়। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’’
প্রসঙ্গত, পুজোর মরসুম শেষে দক্ষিণ দমদমে পাড়ায় পাড়ায় আয়োজিত হয় জলসা ও বিজয়া সম্মিলনী। এর পরে শুরু হবে বিভিন্ন মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এমনই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রবীর পাল জানান, শব্দের মাত্রাছাড়া উপদ্রব সত্যিই সমস্যার দিক। যে কারণে তাঁরা অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে যাতে শব্দ যেতে না পারে, তেমন ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে প্রবীরের দাবি, সব পক্ষকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
একই কথা বলছেন একটি মেলার আয়োজক তথা নির্দল পুরপ্রতিনিধি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে মাইক বা সাউন্ড বক্সের ব্যবহার কমেছে। চলতি বছরেও সেই চেষ্টা বজায় থাকবে।’’ যদিও পুরোপুরি ভাবে মাইক বা সাউন্ড বক্সের শব্দ নিয়ন্ত্রিত হবে কি না, তার সুস্পষ্ট উত্তর মেলেনি কোনও মহল থেকেই।
পুলিশের একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়। এ বারও বিসর্জনের শোভাযাত্রায় জোরে সাউন্ড বক্স বাজানো বন্ধ করা হয়েছে। বাসিন্দাদের মতে, যে ভাবে প্রশাসনিক কর্তা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা সরকারি কর্মসূচি সফল করতে মানুষের কাছে পৌঁছন, তেমন সদিচ্ছা দেখালেই এই সমস্যা মিটবে। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক চেয়ারম্যান পারিষদ সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলেও মাইকের ব্যবহার কমেছে। তবে অভিযোগ এলে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হয়।
কী ভাবে শব্দের দৌরাত্ম্য আরও কমানো যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।’’