প্রতীকী ছবি।
চব্বিশ ঘণ্টায় সাতটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল শহরে! মৃতদের তালিকায় যেমন আছে ১০ বছরের স্কুলছাত্র, তেমনই রয়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সব ক’টিই আত্মহত্যা।
পুলিশ সূত্রের খবর, লেক থানা এলাকার ঢাকুরিয়া বস্তির বাসিন্দা, বছর দশেকের সানি মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ বুধবার দুপুরে উদ্ধার হয় তারই বাড়ির ছাদ থেকে। স্থানীয় একটি সরকারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত ওই বালক। তার মা পরিচারিকার কাজ করেন। সানি তাঁর বড় ছেলে। মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী প্রায়ই নেশা করে পড়ে থাকেন বলে বড় ছেলে স্থানীয় একটি পরিবারের কাছে থাকত। এ দিন দুপুরে পড়শি ওই পরিবারের লোকজনই বাড়ির ছাদে একটি লোহার রডের সঙ্গে রবারের পাইপ দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় সানির দেহ উদ্ধার করেন। তাঁরাই তার মাকে খবর দেন। পরিবারটির দাবি, ছাদে জামাকাপড় শুকোতে দিতে গিয়েছিল সানি। তার পরেই এই ঘটনা।
যদিও ছেলে কেন এমন করবে, ভেবে পাচ্ছেন না মা। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেও মানতে নারাজ তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ওই বালকের দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড পজ়িটিভ, শুনেই পালালেন রোগিণী
অন্য দিকে, এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাটুলি, বেহালা, টালিগঞ্জ, বেলেঘাটা, মুচিপাড়া এবং রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকায় আরও ছ’টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি টাউনশিপের একটি বাড়ির একতলার ঘর থেকে নরেশ সাহা (৫৫) নামে এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, গড়িয়াহাটে ব্যবসা করতেন নরেশবাবু। কিন্তু লকডাউনে বাজার বন্ধ থাকায় তাঁর প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল। অনুমান, আর্থিক টানাপড়েনেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়। এ দিনই সকাল ৮টায় বেহালার ক্যানাল রোড থেকে উদ্ধার হয় নকুল মণ্ডল নামে বছর সত্তরের এক বৃদ্ধের দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, একা থাকতেন ওই বৃদ্ধ। আর্থিক অবস্থাও বিশেষ ভাল ছিল না। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, দীর্ঘ দিন ধরে একা থাকতে থাকতে অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। সে কারণেই তিনি এমন পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেট-যুদ্ধের প্রস্তুতি, জঙ্গলমহলে আইটি সেলের দাবি তৃণমূলে
এর পাশাপাশি এ দিন হাজরা রোড থেকে উদ্ধার হয় বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির দেহ। তাঁর নাম মোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলেঘাটা থেকে উদ্ধার হয় বছর তিরিশের যুবক ইন্দ্রনীল কর্মকারের দেহ। দুপুরে মুচিপাড়া থানা এলাকার একটি বাড়ি থেকে মেলে বছর উনিশের এক তরুণের দেহ। তাঁর নাম টোটন দাস (১৯)।
রিজেন্ট পার্ক থানার মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সরণি থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়েছে রোহিত গুপ্ত (১৯) নামে এক তরুণের দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতেন রোহিত। পড়া নিয়ে তাঁকে বকেছিলেন বাড়ির লোক। তার পরেই নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন ওই তরুণ। বহু ডেকেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষে দরজা ভেঙে রোহিতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।