গ্রেফতার অভিযুক্তেরা। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতায় পর্দাফাঁস নকল সোনা কারবারের। শনিবার পুলিশের জালে ধরা পড়েছে তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক জন বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযোগ, পাঁচ কোটি ২০ লক্ষের মূল্যের সোনা প্রতারণা করা হয়েছে। ফাঁদ পেতে অভিযুক্তদের ধরল শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমল রায় নামে এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগ করেন। তিনি পুলিশকে জানান, তাঁর কাছে অনেক সোনার গয়না ছিল। সেই গয়নার পরিবর্তে সোনার বার দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মিঠু নামে এক ব্যক্তি। সাত কেজি ৮০৫ গ্রামের সোনার গয়না মিঠুকে দিয়েছিলেন অমল। যার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
গত ১৭ জুলাই কলকাতার একটি হোটেলে অমলকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেই হোটেল ঘরে মিঠু ছাড়াও আরও কয়েক জন ছিলেন। অভিযুক্তেরা অমলকে বেশ কয়েকটি সোনার বার দেন। তখন সন্দেহ না হলেও পরে তাঁর সন্দেহ হয়। যাচাই করে দেখেন ওই সোনার বারগুলি নকল। তার পর থেকে অভিযুক্তদের আর খোঁজ মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অমলের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নেমে পুলিশ হোটেল এবং আশপাশের এলাকার সিসিটিভি খতিয়ে দেখে মিঠুকে চিহ্নিত করে। দেখা যায়, হোটেল থেকে সোনার গয়নাগুলি নিয়ে বেরিয়ে আসেন মিঠু। তার পর অপেক্ষারত এক জনের সঙ্গে কথা বলেন। কিছু ক্ষণ পর দু’জনেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যান। পুলিশ জানতে পারে, মিঠুর সঙ্গীর নাম জিতেন পাল। তিনি বৌবাজার এলাকায় সোনার ব্যবসা করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, মিঠু বাংলাদেশের বাসিন্দা।
তার পরেই জিতেনের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। মুচিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে তারা। জিতেনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে পুলিশ। জেরার মুখে ওই চক্রের আরও মিঠু ছাড়াও আরও দু’জনের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। মুচিপাড়ার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সাত কেজির বেশি সোনার গয়নার হদিস পায় পুলিশ। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে উত্তম পাল এবং গৌতমচন্দ্র সাহা নামে দু’জকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে মিঠুকেও ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। এই চক্রের নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত কিনা তা-ও খতিয়ে দেখছে তারা।